অপরাধীদের টার্গেটে সাংবাদিক মনছুর: ফেসবুক থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম সাংবাদিক সংস্থার তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং সাংবাদিক মো: মনছুর আলম একাধিকবার অপরাধীদের টার্গেটের শিকার হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, অপরাধীরা তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা আইসিটি সহ বিভিন্ন মামলা করে হেরে গিয়ে, সরাসরি হামলা চালিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর এখন ফেসবুক থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনায় লিপ্ত। সাংবাদিক মনছুর বাঁশখালী নিউজের প্রকাশক ও সম্পাদক, পরিকল্পিত বার্তার প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক, কক্সবাজার বুলেটিন এর সম্পাদক সহ জাতীয় পত্রিকায় রিপোর্টারের দায়িত্বে রয়েছেন।

সাংবাদিক মনছুর আলম জানান, তাঁর দীর্ঘ প্রায় একযুগের সাংবাদিকতা জীবনে তিনি সবসময় ন্যায়ের পক্ষে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। এর ফলে অপরাধী চক্র তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। “তারা মিথ্যা আইসিটি সহ বিভিন্ন মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা আদালতে হেরে যায় এবং সরাসরি আমার ওপর হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা করে,”।

হত্যাচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর, অপরাধীরা এখন নতুন পরিকল্পনায় নেমেছে। মনছুর বলেন, “তারা আমাকে ফেসবুক থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য মিথ্যা রিপোর্ট করছে। তাদের উদ্দেশ্য হলো আমাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে বিচ্ছিন্ন করা, যাতে আমার পেশাগত কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়।”

গত ৬ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাঁর অ্যাকাউন্ট ছয়বার স্থগিত করে। পাঁচবার পরিচয় যাচাইয়ের মাধ্যমে অ্যাকাউন্টটি পুনর্বহাল হলেও ষষ্ঠবার স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি মনে করেন, অপরাধী চক্রের মিথ্যা রিপোর্ট এবং ফেসবুকের নীতিমালার ভুল প্রয়োগই এর কারণ।

ফেসবুকের "বিপদজনক ব্যক্তি ও সংস্থা" নীতিমালার আওতায় তাঁর অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছে, যা তিনি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও ভুল বলে দাবি করেছেন। মনছুর আলম বলেন, “আমাকে সন্ত্রাসীর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে, যা শুধু আমার পেশাগত মর্যাদাকেই ক্ষুণ্ণ করেনি, বরং আমার জীবনের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট (@MdMonsurAlamFb) বন্ধ থাকার কারণে তাঁর সাংবাদিকতার কাজে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটছে। তিনি বলেন, “আমার কার্যক্রম অপরাধীদের জন্য অসন্তোষের কারণ। তাদের লক্ষ্য আমাকে থামানো, যাতে আমি সত্য প্রকাশ করতে না পারি।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফেসবুকের অ্যালগরিদমের একটি বড় সীমাবদ্ধতা হলো ভুয়া রিপোর্ট বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগকে চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হওয়া। যদি একাধিক ব্যক্তি একই অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করে, তা হলে অ্যালগরিদম সেটি প্রকৃত সমস্যা বলে গণ্য করে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।

মনছুর আলমের বক্তব্য অনুযায়ী: তার কোনো পোস্টে ফেসবুকের নীতিমালা লঙ্ঘনের কোনো সরাসরি অভিযোগ ছিল না। তার অ্যাকাউন্টের বারবার স্থগিতাদেশ এবং পুনরুদ্ধার প্রমাণ করে যে, এটি একটি ভুল বোঝাবুঝি বা মিথ্যা অভিযোগের ফল। তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং পেশাগত কাজের ওপর এটি সরাসরি আঘাত।

মনছুর আলম সবাইকে সতর্ক করে বলেন, “১৪ ডিসেম্বর থেকে আমি ফেসবুকে অনুপস্থিত। এই সময় আমার নামে কোনো আইডি থেকে বিতর্কিত বা অনৈতিক কিছু পোস্ট করা হলে আমি এর দায় নেব না। এটি অপরাধীদের ষড়যন্ত্রের অংশ।”

এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল, ইউরোপীয় ডেটা প্রোটেকশন কমিশনসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর প্রত্যাশা, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেবে এবং তাঁর অ্যাকাউন্ট পুনর্বহাল করবে।

সাংবাদিক মনছুর আলম আরো বলেন, “আমি সবসময় সত্যের পক্ষে কাজ করেছি এবং করব। অপরাধীদের এসব ষড়যন্ত্র আমাকে থামাতে পারবে না।” তিনি ফেসবুক এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ করেন, এ ধরনের অপরাধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য।

এ বিষয়ে এখনো ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ