হৃদয় বিশ্বাস: হামলার পরও অধরা!


চট্টগ্রাম মহানগর সংবাদদাতা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা হৃদয় বিশ্বাস এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।

গত ৪ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরের নিউমার্কেট মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হৃদয় বিশ্বাস ও তার অনুসারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হামলার সময় গুলি ছোড়ার ঘটনাও ঘটে। এতে অনেক ছাত্র গুরুতর আহত হন এবং কয়েকজন পঙ্গু অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।

সূত্রে জানা যায়, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা হৃদয় বিশ্বাস চট্টগ্রামের আলোচিত সিআরবি ডাবল মার্ডার মামলার প্রধান আসামি সাইফুল ইসলাম লিমনের ঘনিষ্ঠ অনুসারী। হৃদয়ের পৈতৃক নিবাস কুমিল্লায় হলেও তার কার্যক্রম বেশি সক্রিয় চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার খাতুনগঞ্জ এলাকায়।

হৃদয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ২০১৭ সাল থেকেই বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। সেই সময় কোতোয়ালি থানার এসআই জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে মোবাইল ছিনতাই, ডাকাতি এবং স্থানীয় কিশোর গ্যাং পরিচালনার অভিযোগ ছিল। তবে আর্থিক লেনদেন ও প্রভাবশালীদের তদবিরের মাধ্যমে তিনি জামিনে মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার পরও তার অপরাধ কার্যক্রম বন্ধ হয়নি।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা পরিচয় দিয়ে তিনি বিভিন্ন চাঁদাবাজি, গুম, এবং খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল অভিযোগ উঠেছে। নগরীর ফিরিঙ্গি বাজার, কোতোয়ালি এবং নিউমার্কেট এলাকায় তার কিশোর গ্যাং বাহিনীর নেতৃত্বে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটেছিল।

সম্প্রতি সনাতন জাগরণ মঞ্চের ৮ দফা দাবির আন্দোলনের মুখ্য নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে হৃদয়ের অনুসারীরা মিছিল বের করে। সেখানে পুলিশের গাড়িতে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এছাড়া চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার সঙ্গেও হৃদয় বিশ্বাসের নাম জড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর থেকে হৃদয় বিশ্বাস পলাতক। অভিযোগ রয়েছে, মামলা থেকে বাঁচতে তিনি এখন বিএনপির স্থানীয় কিছু নেতাকর্মীর মাধ্যমে লবিং করে আত্মগোপনে রয়েছেন।

অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এখনো তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। এলাকাবাসীর দাবি, তার মতো অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে চট্টগ্রামে এমন অপরাধ আর না ঘটে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ