শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাত ১০:৪৮ মিনিটে লিপি আক্তার ও ফরহাদ স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেল গুলজার আবাসিকের একটি রুম ভাড়া নেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, রবিবার সকাল ১০টার দিকে ফরহাদ হোটেল ত্যাগ করেন। হোটেলটির নিয়ম অনুযায়ী রুম চেক আউটের নির্ধারিত সময় দুপুর ১২টা পেরিয়ে গেলেও কোনো সাড়া না মেলায় হোটেলের কর্মী রশিদ রুমে প্রবেশ করেন এবং লিপির মরদেহ দেখতে পান। ঘটনা সম্পর্কে পুলিশকে খবর দেওয়া হয় বিকেল ৪টার দিকে, যা স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয় সূত্র ও হোটেলের কর্মীদের ভাষ্যমতে, হোটেল গুলজার আবাসিকে দীর্ঘদিন ধরে যৌন ব্যবসা চলছে। রশিদ নামের কর্মী জানিয়েছেন, লিপি অতীতে আরও কয়েকবার বিভিন্ন পুরুষ সঙ্গীর সাথে হোটেলে এসেছিলেন এবং তাকে পেশাদার যৌনকর্মী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, হোটেল কর্তৃপক্ষ খদ্দেরদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন রেটের পতিতা সরবরাহ করে এবং এই ধরনের অবৈধ কার্যকলাপের ফলে অল্প বয়সী স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ সেখানে যাতায়াত করছে।
হোটেল গুলজার আবাসিককে কেন্দ্র করে এ ধরনের অবৈধ কার্যকলাপ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য দায়ী। স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা মনে করেন, এই ঘটনার মাধ্যমে বহদ্দারহাটে যৌন ব্যবসার ভয়াবহতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যৌন ব্যবসা এবং এর সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে, এই ধরনের হোটেলগুলোর কার্যক্রম নিয়মিত পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখা প্রয়োজন।
একই প্রসঙ্গে আইনজীবী ও সমাজকর্মী আব্দুল ওয়াহেদ হোসাইনী বলেন, অল্প বয়সী শিক্ষার্থী ও যুবসমাজকে এ ধরনের হোটেলে টেনে আনা সামাজিক অস্থিরতার একটি প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে এবং তারা মাদকাসক্তি, যৌনকর্মসহ নানা ধরনের বিপথগামীতার শিকার হচ্ছে। এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড সমাজের মূল ধারা থেকে যুবকদের দূরে ঠেলে দিচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে একটি সামাজিক সংকটের জন্ম দিতে পারে। হোটেল গুলজারের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং প্রশাসনকে আরও দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। হোটেলের বিরুদ্ধে অবৈধ কার্যকলাপের অভিযোগের যথাযথ তদন্ত করে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তাছাড়া, যৌনকর্ম এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করা উচিত।
0 মন্তব্যসমূহ