পরিবেশ পাহাড় ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হাসিনা সরকারের ভয়ংকর দুর্নীতি


আব্দুল আলীম নোবেল: দোহাজারি থেকে কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের লুটপাটের প্রকল্পে পরিণত হয়েছিল। যে প্রকল্পটি ১৮শ কোটি দিয়ে শুরু হলেও শেষ হয় ১৮ হাজার কোটি টাকা দিয়ে। এমন রেললাইন নির্মাণ বিশ্বে বিরল। তার সাথে পরিবেশ বিপর্যেও তারা একটি বাজে দৃষ্টান্ত রেখে গেছে। 

সংরক্ষিত বন, বনভূমি এবং বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য চুনতি, ফাসিয়াখালী, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের মধ্য দিয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মিত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পে সংগঠিত হয়েছে পরিবেশ ধ্বংসসহ নজিরবিহীন দুর্নীতি। 

একটু গভীর গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে দেখা যায়, রেল এবং বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সরাসরি সম্পৃক্ততা, সহযোগিতা আর পারস্পরিক ইন্ধনে। এরূপ বিধ্বংসী পরিবেশ বিনাশের জন্য পুরো চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জলবায়ুতে পড়েছে বিরূপ প্রভাব।

পরিবেশগত প্রভাব বিবেচনায় প্রকল্পটি এডিবি'র এ ক্যাটাগরিতে পড়ে অর্থাৎ এ অঞ্চলের রেলপথ নির্মাণ করা হলে তা এর জলবায়ু ও জীববৈচিত্রের প্রাণ ধারনে যে ভয়াবহ পরিবর্তন ঘটাবে সেটাকে আর কখনোই পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা যাবে না এমনটি মনে করছেন পরিবেশবিদরা।  

রেলপথের দৈর্ঘ্য ১০০ কিলোমিটার। নির্মিত রেলপথে কর্তনকৃত পাহাড়ি এলাকার বনভূমির দৈর্ঘ্য ৬৭ কিলোমিটার। ৯১স্থানে পাহাড় কাটা হয়েছে প্রায় ১৩ কিলোমিটার। 

কর্তনকৃত বনভূমি এবং সাফারি পার্কের অবস্থান দোহাজারী থেকে চকরিয়া হয়ে হারবাং পর্যন্ত প্রায় ৬৭ কিলোমিটার। ব্যাপকভাবে কর্তনকৃত বৃক্ষরাজীর অবস্থান দোহাজারী জঙ্গল চুনতি, নাপিতখালী ঝিওলঞ্জা, হারবাং ফুলছড়ি, এখানে গাছ কর্তন করা হয় ১০২ প্রজাতির প্রায় ৫ লক্ষ।

এদের মধ্যে; ৫০ প্রজাতির প্রায় ৩ লক্ষ, ৬ প্রজাতির প্রায় ৬৫০ টি গাছ ঔষধি গাছ, ৩৫ প্রজাতির প্রায় ২ লক্ষ  গাছ সাধারণ ফলজ ও বনজ। নির্মিত রেলপথটি নদী, পাহাড়, পাহাড়ি জলীয় ধারা এবং সমুদ্রের খাঁড়ি অতিক্রম করেছে ১৭৭ টি স্থানে।

বিলুপ্তপ্রায় হাতি চলাচলের পথ ধ্বংস হয়েছে ১১ টি স্থানে। বিশ্বে সংরক্ষিত বন, বনজ সম্পদ, পাহাড় আর বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস করে রেলপথ নির্মাণের এরূপ ভয়াবহ নজির বাংলাদেশ ছাড়া আর কোথাও হয়নি।

বন নীতিমালা ১৯৯৪ এর ১৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই ক্ষমতা সরকার প্রধানের একচ্ছত্র ক্ষমতা প্রয়োগ করে এই ধ্বংসাত্মক পরিবেশ বিনাশী রেলপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এটি বাস্তবায়নে ভয়ংকর দুর্নীতিতে জড়িত ছিল রেল ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কিছু অতি উৎসাহী কর্মকর্তা এমনটি অভিযোগ তুলছেন সচেতন মহল। 

১৮শ কোটি টাকার কাজ ১৮ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারা বিপুল অংকের টাকা জায়েজ করতে টাকার পরিমাণ বাড়িয়েছে।   

রেলপথের (অ্যালাইনমেন্ট) নির্ধারণকালে মাঠ পর্যায়ে যেমন কোনো লোকেশন, টপোগ্রাফিক্যাল এবং এরিয়্যাল সার্ভে করে নাই। তেমনি এই রেল পথের সম্ভাব্যতা যাচাইকালে আয়োজিত সভাগুলো সম্পাদনে দ্রুততার আশ্রয় নিয়ে ওই সকল সভায় খ্যাতনামা কোনো পরিবেশবিদ, সংস্থা, পরিবেশবাদীদের সংগঠন কিংবা এনজিও সংস্থার কোনো প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ কিংবা উপস্থিত থাকার সুযোগ দেয়নি। পরিবেশ ধ্বংস করে রেলপথ নির্মাণ করা মোটেও সমীচীন হবে না বন বিভাগ এমন দাবি তুলেও তাদেরকে পাত্তাও দেয়নি।

প্রচলিত গতির প্রতি কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করতে যেখানে সারা পৃথিবীতে ব্যয় হয় অঞ্চল ভেদে ৫ থেকে ১৫ কোটি টাকা সেখানে এই প্রকল্পের প্রতি কিলোমিটার নির্মাণের ব্যয় ১০ থেকে ১২ গুণ বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৩০ থেকে ১৫০ কোটি টাকা। 

২০০৯ সালে প্রণীত প্রকল্প প্রস্তাবনা মোতাবেক ওই প্রকল্পের সম্যক ব্যয় ধরা হয়েছিলো ১৮৫২ কোটি টাকা। কাজ করার সময়সীমা নির্ধারিত ছিলো ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল। তখন কিন্তু এই প্রকল্পে এডিবি অর্থায়ন করতে রাজি হয় নাই। কিন্তু ৬ বছর পরে প্রকল্প ব্যয় ১০ গুণ বাড়ানোর পরে এডিবি এই প্রকল্পে অর্থায়ন করতে রাজি হয়। এডিবি কেনো রাজি হয় আর প্রকল্পের সংশোধিত প্রস্তাবনায় ব্যয় বৃদ্ধির ভৌতিক অংশ কতটা ভয়াবহ হয় এবার সেটি একটু  দেখে নেয়া যাক।

*অধিগ্রহণের জন্য নির্ধারিত জমির দাম বাড়ানো হয় ৯৬২% * রেলপথের জন্য মাটির বাঁধ নির্মাণের কাজে ব্যায় বাড়ানো হয় ১৪৬৪%, রেলপথ নির্মাণের ব্যয় বাড়ানো হয় ৪৫০%, সেতু এবং কালভার্ট নির্মাণের ব্যয় বাড়ানো হয় ৯৫০%, স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ কাজের ব্যয় বাড়ানো হয় ২২০০%। এই হিসেবে কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পে প্রতি কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হয়েছে ১৫৪.৪৮ কোটি টাকায়।

গেল ২০১৬ সালে ভারতের মন্ত্রিসভায় ৩২,৫০০ কোটি রুপি (৩৭৩৭৫ কোটি টাকা) ব্যয়ে ৭টি নতুন রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। ৭টি নতুন রেল পথের দৈর্ঘ্য ২৩৩৯ কিলোমিটার। সুত্র ১৬ আগস্ট, The Hindu। তারা ৩৫টি জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়। এতে প্রতি কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে গড় খরচ পড়ে ১৫.৯৭ কোটি টাকা। অথচ এর ৬ বছর আগে কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ কাজে খরচের যে  এস্টিমেট করা হয়েছিল তাতেও প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৫.১৯ কোটি যা এমনিতেই অনেক বেশি ছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে ২০১৫-১৬ সালে তা আরো ১০ গুণ বাড়িয়ে করা হয় ১৫৪.৪৮ কোটি টাকা।

এর ঠিকাদার নির্বাচনের পদ্ধতিতেও ছিলো ভয়াল দুর্নীতির এক কালো অধ্যায়। এত বিশাল অংকের বাজেটে রেলপথ নির্মাণের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের কোনো ঠিকাদারের না থাকলেও চীনের ছত্রছায়ায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার দুই রেল সিন্ডিকেট তমা এবং ম্যাক্স কে নিয়োগ দানের ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা হয়। এজন্য রেলপথ নির্মাণের অনুমোদিত প্রকল্প দলিলে বর্ণিত ক্রয়কার্যটিকে ভেঙে দুই ভাগ করা হয় যাতে সেই দুজন ঠিকাদার (তমা এবং ম্যক্স) সমানভাবে দুর্নীতির মাধ্যমে ভয়াল লুটপাটের সুযোগ পায়।

(তমা এবং ম্যাক্স) এতো বৃহৎ মূল্যমানের কাজ করার যোগ্যতাতো দূরে থাক দরপত্র দলিলে বর্ণিত শর্তানুযায়ী জয়েন ভেঞ্চারে (JV) অংশগ্রহণ করার অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতা ছিলো না তাদের।  ছলচাতুরি, তথ্য ধামাচাপা দেওয়া,  আবার কখনো মূল তথ্যকে বিকৃত করে ভয়াল কুট কৌশলের আশ্রয়ে তাদের (তমাএবং ম্যক্স) উভয়কে দুইটা চাইনিজ কোম্পানির সাথে JV করার যোগ্য করে দেখানো হয়।


এরূপ প্রক্রিয়ায় এই প্রকল্পে নিয়োজিত ঠিকাদার তমা (তমা) যার কিনা ২০১১ সালে ৩ থেকে ৫ কোটি টাকার সাধারণ পূর্ত কাজ (Civil Works) করার যোগ্যতা ছিল না তাকে ভুয়া সার্টিফিকেটের মাধ্যমে ৮৫৮ কোটি টাকায় ২০১১ থেকে ২০১৪ মেয়াদে সম্পাদিত টঙ্গী- ভৈরববাজার দ্বৈত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সাজিয়ে কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের ১০ হাজার কোটি টাকা মূল্যমানের Lot-1 [Dohazari to Chakaria (Ch: 02+000 Km to Ch: 50+400 Km)] প্যাকেজের কাজ দেওয়া হয়। যাতে তার সক্ষমতাকে জালিয়াতির আশ্রয়ে কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হয় (এক লক্ষ গুন) বা তারও বেশি। উভয় ক্ষেত্রে তাকে প্রক্সি দিয়ে জালিয়াতির সুযোগ করে দিয়েছে একটি চাইনিজ কোম্পানি। নাম তার চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড। 

অপর অংশ Lot-2 [Chakaria to Coxbazar (Ch: 50+400 Km to Ch: 101+477 Km)] করার দায়িত্ব পায় ম্যাক্স গ্রুপ। এই ম্যাক্স ও দুর্বিষহ দুর্নীতি, মিথ্যা তথ্য ও ভুয়া সার্টিফিকেটের মাধ্যমে জাল জালিয়াতির আশ্রয়ে এই প্রকল্পের Lot-2 অংশের ঠিকাদার হিসেবে নিয়োজিত হয়। এই Lot-2 প্যাকেজে ম্যাক্স, চাইনিজ কোম্পানির সাথে জেভি করে দরপত্রে অংশগ্রহণ করে যেখানে অংশগ্রহণকারী মূল আন্তর্জাতিক ঠিকাদারের অতীতকালে সম্পাদিত ২২৬৮ কোটি টাকার একটি একক কাজের এবং তার পার্টনার হিসেবে অংশগ্রহণকারীকে ওই প্যাকেজ মূল্যের ২৫% অর্থাৎ ৫৬৭ কোটি টাকা মূল্যের কাজ সম্পাদনের অতীত অভিজ্ঞতা আছে এটি দেখানোর শর্ত ছিলো। এই শর্তের বিষয়টি প্রমাণ করতে গিয়ে (ম্যাক্স) জমা দিয়েছে ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের সম্পাদিত "লাকসাম- চিনকি আস্তানা দ্বৈত রেলপথ নির্মাণ কাজের" সনদ। 

(ম্যাক্স) সফলভাবে কাজ সমাপ্তির রেকর্ড ছিলো কেবলমাত্র ১৬.৭ কোটি টাকার। ওই মূল্যমানের কাজটি সে করেছিলো ২০০৬-২০১০ সালে ঢাকা-টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর কাজের সময়ে। যতটুকু জানা যায় ওই কাজটিও তার করার যোগ্যতা ছিলো না যখন এই কাজটি ওই ২০০৬ সালে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন শুরু হয়। ওই কাজটি মূলত নেওয়া হয়েছিলো একটি চাইনিজ কোম্পানির নামে। অতীতকাল থেকেই এরা ছলনার এই ছলনাময়ী প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আসছিলো যার সর্বশেষ নজির এই কক্সবাজার রেল প্রকল্প। আর এভাবেই এই ম্যাক্স ১৬.৭ কোটি টাকার যোগ্যতা দিয়ে কক্সবাজার রেল প্রকল্পে ৮,০০০ (আট হাজার) কোটি টাকার কাজ বাস্তবায়নের সুযোগ হাতিয়ে নেয়। যেটা নজিরবিহীন এবং নেক্কারজনক। 

দুর্নীতির মহোৎসবের আয়োজন হচ্ছে এটা বুঝতে পেরে বিষম বিচলিত হয়ে তৎকালিন এই প্রকল্পের মূল্যায়ন প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে নিজেকে সরিয়ে নেন মূল্যায়ন কাজের অন্যতম সদস্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটের অধ্যাপক প্রফেসর হাসিব মোহাম্মদ আহসান।


এভাবে এডিবি' র সরাসরি ইন্ধন ও অন্তর্ভুক্তিতে তমা ও ম্যাক্স এর মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সরাসরি সহযোগিতায় এই সেক্টরে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের এক মহোৎসব সম্পন্ন করা হয়েছে। ২০১১ থেকে ২০১৬ সালে সম্পাদিত ওইসব ক্রয় চুক্তির মহোৎসবে যে সব দুর্নীতি পরায়ন কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন তাতে তৎকালীন মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন, সাগর কৃষ্ণ চক্রবর্তী, নাজনীনা আরা কেয়া, লিয়াকত আলী খান, মফিজুর রহমান এবং আবুল কালাম চৌধুরীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ।


অনুসন্ধান কালে আরও জানা যায় যে, এই অঞ্চলের বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক পরিবেশে উপযুক্ত কৌশলে মাঠ পর্যায়ে সরেজমিন উপস্থিত থেকে জরিপ কাজ সম্পাদন করে এই রেলপথের অ্যালাইনমেন্ট নির্ধারণ না করায় পরবর্তীতে জমি অধিগ্রহণ কাজে ব্যাপক বিড়ম্বনা, বিশৃঙ্খলা ও ভুলভ্রান্তির সৃষ্টি হয় যাতে বহু নিরীহ মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হতে হয় এবং অনাহুত ভাবে ফসল ও সম্প্দহানির পরিমাণ বেড়ে যায়।


*বাস্তবের সাথে অমিল মৌজা ম্যাপ, মৌজা বাউন্ডারী সংযোগস্থলে ভিন্নতা, দাগবিহীন ও ভৌতিক দাগের উল্লেখে জমি অধিগ্রহণের শিডিউল প্রণয়ন। 

দেশের আলোচিত দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কন্সট্রাকশন ও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। প্রতিষ্ঠান দুটির কর্ণধার আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক ও গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর রেলের ‘কালো বিড়াল’ হিসাবে পরিচিত। রাজনৈতিক প্রভাবে তারা গত ১৬ বছরে অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকার কাজ কব্জা করেছেন। রেল ভবনের উচ্চ পদে নিজস্ব কর্মকর্তা বসিয়ে তারা গড়ে তুলেছিলেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট। কাজ পাওয়ার পর দফায় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ ও খরচ বাড়িয়ে লোপাট করেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা। লুটের টাকার বড় অংশ ঠিকাদারি কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি আমদানির নামে ভুয়া এলসি খুলে বিদেশে পাচারের অভিযোগও আছে প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে।

এই অনিয়ম-দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের ঘটনা উদঘাটনে দুই দফা অনুসন্ধান টিম গঠন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতিবারই প্রতিষ্ঠান দুটির কাছে তথ্য-উপাত্ত চেয়ে চিঠি পাঠানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছে দুদকের কাজ। কার্যত অনুসন্ধান ফাইল ‘লাল ফিতায় বন্দি’। সংস্থার ভেতরে-বাইরে প্রভাবশালী মহলের তদবিরে অনুসন্ধান প্রতিবেদন এখনো আলোর মুখ দেখেনি। দুদকে সেই পুরোনো ‘ভূত’ বহাল থাকায় পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও এদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান কাজে গতি আসেনি। 

তৎকালীন মহাপরিচালক আমজাদ হোসেনের বক্তব্য নেওয়া জন্য তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যক্তিগত সমস্যা কথা বলে কথা বলতে রাজি হয়নি। অপর দিকে নাজনীনা আরা কেয়ার সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে বিভিন্ন রেল নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি হওয়ায় রেললাইন নির্মাণে এত ব্যয় বেড়েছে। মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় অভিযুক্তদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ