লুট হওয়া মোবাইলসহ সরঞ্জাম উদ্ধার করে ফেরত দিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের এক শিক্ষার্থী


নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানা থেকে লুট হওয়া মোবাইলসহ পুলিশের বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশের কাছে জমা দিয়েছে চট্টগ্রামের বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের এক শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় কোতোয়ালী থানায় উপস্থিত হয়ে থানার দায়িত্বরত সেকেন্ড অফিসার এসআই গৌতম তেওয়ারীর কাছে ১৩টি অ্যান্ড্রয়েড ও ৫টি বাটন ফোনসহ মোট ১৮টি মোবাইল জমা দেন ওই শিক্ষার্থী। ওই শিক্ষার্থী নগরীর পাথরঘাটা এলাকার শওকত আলীর ছেলে। জানা যায়, গত (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর ওই দিন বিকালে দেশের বিভিন্ন থানায় ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। থানা থেকে কোনো রকমে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন পুলিশ সদস্যরা। এরপর থানার বিভিন্ন অস্ত্র, মোটরসাইকেল, মোবাইল ও নগদ অর্থসহ পুলিশের বিভিন্ন সরঞ্জাম লুট করা হয়। সন্ত্রাসী কর্তৃক লুটপাটের খবর শুনে একই দিন লুট হওয়া সরঞ্জাম উদ্ধারে মাঠে থাকে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। তারই ধারাবাহিকতায় ওমরগণি এম.ই.এস. কলেজের বিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ ইয়াছিন আরাফাত (২৬) চোরাই মাল ভাগ—বাটোয়ারা করার সময় চোরদের কাছ থেকে ১৮ টি মোবাইল, ১৫ টি জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি), ২টি ব্যাংকের ডেবিট কার্ড, ২ টি ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ১টি ভিসা কার্ডসহ ১০টি চাবি উদ্ধার করে। উক্ত গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম সমূহ উদ্ধারের পর টহলরত সেনা সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা পুলিশ কন্ট্রোলরুমে যোগাযোগ করতে বলেন। পুলিশের কন্ট্রোলরুমে যোগাযোগ করা হলে তারা সরঞ্জামগুলো নিকটস্থ থানায় জমা দিতে বলেন। পরে ওই শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের সহায়তায় থানায় গিয়ে উদ্ধার করা সকল সরঞ্জাম জমা দেয়। তার এই দায়িত্ববোধ এবং সততায় মুগ্ধ হয়ে পুলিশ প্রশাসন তাদের ধন্যবাদ জানান। সরঞ্জাম জমা দেওয়ার সময় সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সাংবাদিক ও কলামিস্ট ওসমান এহতেসাম ও সমাজকর্মী ও সাংবাদিক আনিছুর রহমান। শিক্ষার্থী ইয়াছিন আরাফাত বলেন, গত (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর ওই দিন দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কিছু দুর্বৃত্ত বিভিন্ন থানা থেকে লুট করে। আমরা ছাত্রসমাজ কোনোভাবেই এর সঙ্গে জড়িত নই। দেশ গড়ার দায়িত্ব আমাদের। আমরা ছাত্ররা দায়িত্ব নিয়েই থানা থেকে লুট হওয়া মোবাইলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করে জমা দিয়েছি। কোতোয়ালী থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই গৌতম তেওয়ারী বলেন, থানা থেকে লুট হওয়া ১৮টি মোবাইল ও বিভিন্ন ব্যক্তির প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট  ফিরিয়ে দিয়ে বৈষম্যবিরোধী এই শিক্ষার্থী উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় কোতোয়ালী থানায় লুট হওয়া অন্যান্য জিনিসপত্রও খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। যারা মোবাইল হারিয়েছে তাদের থানায় আসার আহ্বান জানান তিনি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ