রামুতে দীর্ঘ ৩০ বছরের খতিয়ানি ভুক্ত জায়গা দখল করে বাসা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে ভূমি দস্যু সিরাজের বিরুদ্ধে! পর্ব-২


নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজার রামু উপজেলা চাকমারকুল ইউনিয়নের খোন্দকার পাড়ার বাসিন্দা মৃত সুলতান আহমদের পুত্র সিরাজুল ইসলাম,সেই ডাকাতি মামলা ও হত্যা সহ একাধিক মামলার আসামি।বর্তমানে সে প্রতিনিয়ত ভূমিদস্যুতা করেই যাচ্ছে। সেই রামুতে কিছু কথিত রাজনৈতিক ব্যক্তির ছত্রছায়ায় অনেক নিরীহ মানুষকে নির্যাতন করে যাচ্ছে। সেই রামুতে ভূমি দস্যু সিরাজ নামে বেশ পরিচিত লাভ করেছে। তার বিষয় নিয়ে এলাকায় অনেকেই মুখ খুলতে পারে না। তার রয়েছে একাধিক নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী ও অস্ত্রধারী লোক। সম্প্রতি গত রমজান মাসে তেচ্ছিপুল এলাকার বাসিন্দা নুরুল আমিন, তিনি গেল দুই মাস আগে রোড এক্সিডেন্টে মারা যায়। তার মৃত্যুকে পুঁজি করে ভূমি দস্যু সিরাজ তার দীর্ঘ ৩০ বছরের জায়গাটি দখল করে একটি বাসা নির্মাণ করে রেখেছে। সেই ওই এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির কারণেই আজ ৩০ বছরের খতিয়া ভুক্ত জায়গাটি দখল করার সুযোগ পেয়েছে। এ বিষয় নিয়ে নিহত পরিবারের সন্তান ফয়সাল আমিন রামু থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিল। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,সিরাজুল ইসলাম ও তার ভাই বাহাদুর দুজন মিলে ওই ফয়সালের বাবার জায়গাটি দখল করে রেখেছে। যেহেতু ফয়সালের বাবা রোড এক্সিডেন্টে মারা যায়। এতে নিরুপায় হয়ে ভুক্তভোগী পরিবার থানা ও কক্সবাজার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। তবে ১৯৯৩ সালে তার বাবা এই জায়গাটি সাহাব মিয়া গং এর কাছ থেকে ১৩১০ মাদার খতিয়ান নং থেকে ক্রয় করে নাম জারি করা হয়েছিল ২২৭১ দাগে ভুলক্রমে কিন্তু ভোগ দখলীয় রয়েছে ২১১১ দাগে।  তার বাবা উক্ত খতিয়ান থেকে বিএস মূলে ক্রয় করলেও তিনি ২২৭১ ও ২১১১ দাগে তার নিজ নামে খতিয়ানটি করা হয়। তবে তাদের দাবি এই জায়গাটি তারা ক্রয় করেছিল। 

এই বিষয় নিয়ে নিহত নুরুল আমিনের ছেলে ফয়সাল আমিন জানান,আমার বাবা অন্য ১৯৯৩ সালে শাহাব মিয়া গংদের কাছ থেকে ফতেখাঁরকুল মৌজা সৃজিত বিএস ১৬৮২ নং খতিয়ানের ২২৭১ নং দাগের অন্দরে ০.১১৩৩ একর জমি জায়গাটি ক্রয় করেছিলেন, আমাদের এই জায়গাটি রামু বাইপাস রেল লাইনের অপজিটে। সাম্প্রতিক ২০১৮ সালে এই জায়গাটি রেলওয়ে ম্যাক্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানে কাছে ভাড়া দিয়েছিলেন। তারা দীর্ঘ পাঁচ বছর এই জায়গাটি ভাড়া নিয়ে রেল লাইনের বিভিন্ন সরঞ্জাম রেখে কাজ করেছে। এতে আমার বাবা মারা যাওয়ার পরে এই জায়গাটি আমাদেরকে রেললাইনের লোকেরা বুঝিয়ে দেয়। পরে পার্শ্ববর্তী গ্রামের মৃত সুলতান আহমদের ছেলে সিরাজুল ইসলাম আমার বাবার জায়গাটি দখল করে রেখেছে। উক্ত জায়গাতে সেই একটি টিন দিয়ে বাসা নির্মাণ করেছে। এতে আমরা নিরুপায় হয়ে রামু থানায় গেল ২৮/০২/২৪ একটি অভিযোগ দায়ের করেছি তার বিরুদ্ধে।গেল কয়েকদিন আগে শুনলাম কক্সবাজার আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে ০৬/০৩/২৪ ইং একটি ফৌজদারি মামলা করেছেন। এ মামলাতে আমাদেরকে সাতজনকে অভিযুক্ত করে ১০-১৫ জন অজ্ঞাত রেখে আদালতে মামলাটি দায়ের করে।পরে আদালত উক্ত মামলাটি রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়। আমরা এ বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক ব্যক্তি জানান,ভূমি দস্যু সিরাজ ও তার ভাই সন্ত্রাস বাহাদুর তারা দীর্ঘ বছর ধরে এই এলাকাতে সন্ত্রাসী,চাঁদাবাজি এবং ভূমিদস্যু করে যাচ্ছে। তাদের রয়েছে অটল সম্পদ ও বিপুল পরিমাণ টাকা। ফলে তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে রাজি নন। গেল রমজান মাসে সে রামু কলেজের পেছনে একটি জায়গা দখল করার জন্য অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার নিজস্ব বাহিনী নিয়ে গেলে সেই ওই এলাকার মানুষের কাছ থেকে দৌড়ানি খেয়ে চলে আসে। তাই ওইদিন জায়গাটি দখল করতে পারেনি।

এ নিয়ে শত শত ভুক্তভোগী আদালত সহ থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও অভিযোগ করেছে। তবুও থেকে নেই তার এসব অপকর্ম।তার দিন দিন ভূমি দস্যু বেড়েই চলছে। 

এই বিষয় নিয়ে অভিযুক্ত ভূমিদস্যু সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান,১৯৯৬ সালে সাড়ে ২৩ শতাংশ জায়গায় ক্রয় করেছিলেন নুরুল আমিন,তিনি বড় পুকুরের পাশে ৬ শতাংশ অন্য পাশে ৫ শতাংশ জায়গায় নামজারি করেন।আবার মৌলবী নামে এক ব্যক্তি ভিটা জায়গাতে ২ শতাংশ জায়গায় নামজারি করে আবার ২২৭১ দাগে কিছু অংশ নামজারি করে,তিনি আবার ২০০৮ সালে ১০ শতাংশ জায়গায় বিক্রি করে,শাহাব মিয়ার ক্রয়কৃত জায়গায় ছিল সাড়ে ৩৭ শতাংশ,তার কাছ থেকে সিরাজ ক্রয় করেছিল ১৫ শতাংশ, তাকে দখল দিয়েছিল বড় পুকুরের পাশে ২২৪৪ দাগের মধ্যে,এর তার কাছ থেকে জানতে চাইলে ২২৭১ দাগটি কি নুরুল আমিনে জবাবে শিকার করেন।

এই বিষয় নিয়ে চাকমারকুল ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সিকদার জানান, সিরাজুল ইসলাম সেই তার এলাকার বাসিন্দা তবে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তিনি জানেন না,তবে সেই ভূমিদস্যুতায় জড়িত রয়েছে, এবং সেই একাধিক মামলার আসামি।

এই বিষয় নিয়ে চাকমারকুল ইউনিয়নের বাসিন্দা ভুক্তভোগী হারুন জানান,তাদের পৈত্রিক জায়গাতে মাটি ভরাট করতে গেলে ভূমিদস্যু সিরাজ ওখানে বাধা প্রদান করে।বাধা দেওয়ার পরে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে তারা স্থানীয় চেয়ারম্যান সহ মেম্বারকে অবিহিত করলে সিরাজ ওই জায়গা থেকে পালিয়ে আসে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ