কাপুরুষেরা জীবনে মরে দু’বার, একবার জীবদ্দশায় আর একবার সত্যিকারার্থে যখন দূর বহুদূরে চলে যেতে হয়। তাই সৎ লোক সর্বদাই সততার সাথে এগিয়ে যায়, তিনি কখনো পিছু হাটেন না।কারণ, তার একটাই গুণ তিনি চিত্তে অটল থাকেন এবং তিনি সততার সাথে সকল বাধা-বিপত্তিকে ডিঙিয়ে তিনি তাঁর কর্তব্য কাজ দৃঢ়তা, সততা আর সাহসিকতার সাথে করে চলেন যেন দাঁড়াবার সময় তো নেই।তাই, কবিগুরুর ভাষায় বলতে ইচ্ছে করে; সবাই মোরে ছাড়তে পারে, বন্ধু আছে যারা,নিন্দুক যে ছায়ার মতো থাকবে পিছে-পিছে।কবিগুরুর এই লাইন দু’টির মর্মার্থ এই যে সাধারণ কিংবা অসাধারণ কেউই নিন্দার উর্ধ্বে নয় কোনো কাজের স্বীকৃতি বা অস্বীকৃতি উভয়ের জন্য হয় সমালোচনা নয়তো নিন্দা এ দুয়েরই বড় ভূমিকা রয়েছে আমাদের এই জাতীয় জীবনে।সমালোচনা শব্দটি সম্মুখ আলোচনা বা সমালোচনাকে বোঝায় অর্থাৎ কাজের গুণ কিংবা দোষ দুই-ই সমান ভাবে বাদ- বিচার করা।তাই, যেনো তেনো সাময়িক সমস্যার সমালোচনা সহ্য করতে হয়- এটি মহত্বের লক্ষণ । সমাজে এমন কিছু বিজ্ঞ জ্ঞানী স্বাভাবিক চিত্তের মানুষ অথবা ব্যক্তি আছে। যাঁরা সমালোচনা খুব পছন্দ করেন কিন্তু তাঁরা মনে করেন সমালোচনার ( criticism) মাধ্যমে কাজের পরিপূর্ণতা আসে।
কেউ যদি আপনাকে সন্দেহ করে,তাহলে দুঃখ পাবেন না। কারণ, *Suspectable and perfectable are not same thing. মনে রাখবেন, সবাই সোনা বা হীরাকে সন্দেহ করে যে, এটা আসল কিনা কিন্তু লোহাকে কেউ সন্দেহ করে না। সমালোচনা গ্রহণ করার ব্যাপারটি অনেকটা সে রকমই। ব্যক্তিগত সমালোচনার চেয়ে আত্মসমালোচনা সবচেয়ে উৎকৃষ্ট বলে আমি মনে করি।নিজের সমালোচনা নিজেই করার ফলে যে অনুতাপের সৃষ্টি হয়; ফলে, পরবর্তীকালে ঐ ভুলগুলো এড়িয়ে চলা সম্ভব কিন্তু অহেতুক কোনো ব্যক্তির সমালোচনা অসুস্থ মানসিকতার লক্ষণ।
আমি মূলত: সাধারণ একজন,ব্যারিস্টার সুলতান আহমেদ ডিগ্রি কলেজের সর্বনিকৃষ্ট একজন ছাত্র আমি।কখনো কারো সাথে তর্কে বিজয়ী হওয়ার চেষ্টা করিনি।আমি কখনো নিজেকে বড় মনেকরিনি আমার নিজের পরিচয় দেওয়ার মতো যোগ্যতা আমার নেই।তাই আমাকে নিয়ে সমালোচনা না করলে আমি খুশি কারণ উপরে বলা আছে সমালোচনা তো স্বর্ণ বা দামি কিছু নিয়ে হয়। বর্তমানে আমি মানুষের কিছু তথ্য ডায়েরি করতে পড়াশোনার পাশাপাশি ২টি জাতীয় পত্রিকা ও কয়েকটি অনলাইন ২ বছরের জন্য শিক্ষানবিশ প্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব পালন করছি। আমার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কিছু মানুষের কর্মকাণ্ড এবং অন্যান্য যাবতীয় আচরণে হতবাক হয়ে তাই ! লেখাপড়ার ধাঁচ দেখলে আমার মনে পড়ে যায় ইংরেজি ফ্রেজের কথা, Empty vessel sound much অর্থাৎ খালি কলসি বাজে বেশি। এ জাতীয় সাংবাদিক বা সাধারণ মানুষের কথায় আমি মনে করি এদের লেখাপড়ার গভীরতা একেবারেই হালকা কিন্তু তারা জানে না যে, সনদ অর্জন আর শিক্ষা অর্জন এক কথা নয়।
এই ২ বছর সাংবাদিকতা জীবনে গ্রামে- গঞ্জে, শহরে-নগরে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমার দায়িত্ব পালনকালে উচ্চশিক্ষিত ভদ্রোচিত সামাজিক মানুষ খুব কম দেখেছি,যা দেখেছি তাদের কথার সাথে কাজের মিল কিম্বা তাদের কাজের সাথে কথার মিল পাইনি বিশেষ করে ইদানিং সময়গুলোতে। অনেকেই আবার বেশি পড়াশোনার ডিগ্রি লাভে সম্পর্ক নষ্ট করে অন্য কিছুতেই আশক্ত।
মৌখিক কথায় বা কান কথায় কান দেয়ার অর্থ পরনিন্দার শামিল। মৌখিক কথা পরিবর্তনশীল কিন্তু লিখিত কথা পরিবর্তনশীল নয়। যেমন লিখিত হিসাব-নিকাশ কারো নিন্দা করে সাময়িক আনন্দ লাভ করলেও তবে এটা দীর্ঘস্থায়ী নয় । কারণ সত্যের জয় সবসময়ই দেরিতে প্রমাণিত হয় । পরনিন্দার কথা যদি বলি, ধর্মে উল্লেখ আছে- মদ্যপান,চুরি- ডাকাতি, ব্যভিচার ইত্যাদি থেকে মারাত্মক ও নিকৃষ্ট হলো পরনিন্দা করা । বিশেষ করে কুৎসা রটানো, পেছনে সমালোচনা করা,পরচর্চা করা, অকারণে দোষারোপ করা- কারণ, ঔ ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার দোষ অন্যের সামনে তুলে ধরা- এগুলো হলো পরনিন্দা।অগ্র -পশ্চাত্যে অন্যের দোষ বলে বেড়ানো মানে হলো নিজের ধ্বংসকে অভিবাদন জানানো।
পরিশেষে বলা যায়, বাজে সমালোচনা কিংবা পরনিন্দাকে প্রশ্রয় না দিয়ে বরং নিজেকে এই ভেবে সান্তনা দিতে হবে কেউ আপনাকে মূল্য দিক বা না দিক, তুমি সৎভাবে কাজ করে যাও, অসৎ মানুষ হয়তোবা তোমাকে মূল্য বা প্রতিদান কিংবা অবদান অস্বীকার না করলেও স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা আপনাকে ভালো কাজের পুরস্কার দিবেনই- শুধু ধৈর্য্য আর অপেক্ষার পালা মাত্র।
0 মন্তব্যসমূহ