খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধিঃ পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলায় চাঁদাবাজি ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের পাচঁ নেতাকর্মিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
গতকাল ২৭ তারিখ শুক্রবার উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এক জরুরী সভা ডেকে এই পাঁচ নেতাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও বহিষ্কারের সুপারিশকরা হয়।ক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা উপস্থিত তিনজনকে গণ-ধোলাই দেয় এরা হলো জেলা মৎস্যজীবী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল জলিল, উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক হৃদয় ও সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান সবুজ সহ বহিষ্কৃত আরো দুইজন হল এম ইদ্রিস আলী ও বোয়ালখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মান্না মুৎসুদ্দী।
এই পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবৎ দলীয় লোকদেরকে হয়রানি, বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে এবং এরা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দলীয় লোকদেরকে ভয় ভীতি সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও ঠিকাদারসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে আসছে।
দীঘিনালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শফিক বলেন, মোহাম্মদ আব্দুল জলিল, মিজানুর রহমান সবুজ, ফজলুল হক হৃদয় ও এম এ ইদ্রিস আলী দীঘিনালা উপজেলায় দলীয় পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে এবং এলাকার সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন অজুহাতে মারধর করে, মদ খেয়ে মানুষকে মসজিদে যেতে বাধা দেয় বলে সাধারণ মানুষ উপজেলা আওয়ামীলীগের কাছে অভিযোগ করে। এর প্রেক্ষিতে এদের কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়।
মধ্যো-বোয়ালখালি মুসা সওদাগর বলেন আমার প্রতিবন্ধী মেয়ের নামে ফেসবুকে ও বিভিন্ন জায়গায় সাহায্যের আবেদন করে সাহায্য এনে টাকা আত্মসাৎ করেন, আমাকে এক টাকাও দেয়নি।
রশিদ নগরের বাসিন্দা ঠিকাদার সোহেল জানান আমার বাড়িতে ঘরের জন্য মাটি সমান করলে আমি পাহাড় কেটেছি বলে থানার ভয় দেখিয়ে আমার কাছ থেকে বিশ হাজার টাকা নেন ইদ্রিস, জলিল ও সবুজ।
মধ্য বোয়ালখালী স্কুলটিলার নুরু মিয়া বলেন ইদ্রিস, জলিল, সবুজ এদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ এবং আমাকে ভয় দেখিয়ে তিন হাজার টাকা নেয়।
উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা কামরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা বিএনপি করে এই কথা বলে আমার বিরুদ্ধে নিউজ করবে ভয় দেখিয়ে আমার থেকে দুই হাজার টাকা নেন পরবর্তীতে আবারো আমার থেকে টাকা দাবী করে, টাকা না দিলে আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দিয়ে নিউজ করবে বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
এই পাঁচ নেতা ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অপকর্ম এখানেই শেষ নয় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ঢাকায় মারা যাওয়া এক কাজের মেয়ে এলাকায় লাশ নিয়ে আসলে সেখান থেকেও তিন হাজার টাকা নেয় বলে বাচাঁ মেরুং এলাকার বাসিন্দা ভুক্তভোগী নাসিমা বেগম জানান।
মধ্য বোয়ালখালী দুই নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনি বলেন আমাকে একটি সরকারী সোলার এনে দিবে বলে আমার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নেয়, কিন্তুু এরা আমাকে কোন সোলার এনে দেয় নাই।টাকা ফেরত চাইলে উল্টো আমাকে হুমকি-ধমকি দেয়।
এদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট হয়ে বড় মেরুং এলাকার হাবিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তি গত ২৪.০৪.২০২২ সালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন মোঃ আবদুল জলিল ও এম এ ইদ্রিস এর বিরুদ্ধে।
কিছুদিন আগে মধ্যবোয়ালখালী আনসার ভিডিপি সদস্য আলমগীর বলেন রাতে মদ খেয়ে ইদ্রিস, জলিল ও সবুজ আমি ডিউটিরত থাকা অবস্থায় আমাকে মারধর করে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নিউটন মহাজন জানান, এই পাঁচ জন সব সময় আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজী করে দলীয় নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে ও ভূইফোর পাঁচ সাংবাদিকের অত্যাচারে দীঘিনালা উপজেলা বাসি অতিষ্ঠ। তাই এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা হিসেবে দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে দীঘিনালা উপজেলা আওয়ামী লীগ।
0 মন্তব্যসমূহ