অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, বাঁশখালীর কালীপুর ইউনিয়নের গুনাগরি এলাকার ১নং ওয়ার্ডের মতলব বাড়ীতে দীর্ঘদিন ধরে ভাই ভাইয়ের মধ্যে জায়গা সম্পত্তির বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসতেছে। এই বিরোধ আপোষের বাহানায় এস শহীদ উভয় পক্ষের মুবিনুল হক ও তার ভাই প্রবাসী ইউনুসের স্ত্রী জেসমিন আক্তারের নিকট থেকে গত রমজান মাসে ৫ হাজার টাকা করে জামানত নেয়। এতেও বিরোধের কোন সুরহা মেলেনি উলটো জেসমিনের সাথে এসআই শহীদের সখ্যতা গড়ে উঠে। এর জেরে ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬ টার দিকে এসআই শহীদের সাহসে জেসমিন আক্তার গং মুবিনুল হকের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে মুন্নিকে বাঁশখালী মেডিকেল নিয়ে গেলে আশংকাজনক হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে রেফার করেন। চিকিৎসা শেষে ২ মে মুবিনুল হক বাদী হয়ে জেসমিন আক্তার ও তার মেয়ে আপ্রোজা সুলতানা সুমাইয়াসহ মোট ৯ জনকে আসামী করে বাঁশখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলার তদন্তের দায়িত্বে ঐ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক সোলেইমান হলেও আসামী গ্রেপ্তারে তার নেই কোন চেষ্টা।
অনুসন্ধ্যানে আরো জানা যায়, মুবিনুল হকের মামলার আসামী জেসমিন আক্তারের স্বামী বিদেশ থাকায় সেই সখ্যতা থেকে এসআই শহীদ নিয়ে যায় গভীর সম্পর্কে। তাই জেসমিনকে চাওয়ামাত্র আকাশের চাঁদ এনে দিতেও মরিয়া এই এসআই। সম্পর্কের জেরে জেসমিনের বিরুদ্ধে মুবিনুল হকের মামলা রেকর্ডেও সৃষ্টি করেছিলেন অনেক বাঁধা বিপত্তি। মামলা আটকানো তার ২ তাঁরা দিয়ে সম্ভব হয়ে না উঠলেও জেসমিনকে খুশি রাখার চেষ্টা থাকে তার অব্যাহত। আর সেই চেষ্টায় ৬ মে সকালে জেসমিনের বিবাহিত মেয়ে সুমাইয়াকে তার শ্বশুর বাড়ি অর্থ্যাৎ অন্য আরেকটি বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ি এলাকায় গিয়ে তোলে আনেন এই এসআই শহীদ। সেই মুহুর্তের ধারণ করা ভিডিওটিই ১ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের, যেটির বর্ণনা শুরুতেই দেওয়া হয়েছিল। আর সেদিন বিকালেই জেসমিনকে বাদী করে মেয়ের জামাতা রাশেদ ও দেবর রাশেল সহ মুবিনুল হক ও তার ভাই কামালকে আসামী দিয়ে সুমাইয়া অপহরণ মামলা রেকর্ড করান এই এসআই শহীদ। অথচ এখন জেসমিনের মেয়ে শ্বশুর বাড়িতে স্বামী নিয়ে দিব্বি সংসার করে যাচ্ছে। অন্যদিকে মুবিনুল হকের মাথার উপরে তোলে দেয়া অপহরণ মামলাটি নিয়ে পুলিশের ভয়ে সে আছে এদিকসেদিক দৌড়ের উপরে। আর এসআই শহীদ মামলার আসামীর সাথে সখ্যতা গড়ে ফাঁড়িতে নিয়ে এসব কাণ্ড করলেও ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক সোলেইমান দেখেও যেন না দেখার ভান করে। মুবিনুল হকের মামলার আসামী জেসমিন রাতবেরাতেও এসআই শহীদের বাসায় আসা-যাওয়া করে, প্রায় সময় থেকেও যায়। এমনকি এই জেসমিন ফাঁড়িতে গেলেও তদন্তকারী অফিসার ইনচার্জ সোলেইমান তাকে করে না গ্রেপ্তার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেসমিন আক্তারের মেয়ে সুমাইয়ার সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল বাহারছড়া ইউনিয়নের ইলশা গ্রামের ফরিদের ছেলে রাশেদের। মুবিনুল হকের স্ত্রীকে মারধরের ঘটনার পরদিন ২৯ এপ্রিল সুমাইয়া ঘর থেকে পালিয়ে গিয়ে রাশেদকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে রাশেদের ঘরে সংসার করা অবস্থায় এসআই শহীদ আরো পুলিশ নিয়ে ৬ মে সকালে জেসমিন আক্তারের সাথে বাহারছড়া গিয়ে সুমাইয়াকে তোলে আনে। বর্তমানেও সুমাইয়া আর রাশেদের দুপরিবারে মিলামিলের মাধ্যমে যোগাযোগ ও সংসার চলছে।
এই বিষয়ে ভুক্তভোগী মুবিনুল হক জানান, আমাদের ভাই ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা জায়গা নিয়ে বিরোধ আপোষ-মীমাংসা করে দেওয়ার কথা বলে এসআই শহীদ রমজান মাসে ৫ হাজার টাকা করে নিয়েও কোন সমাধান করে দেয়নি। এসআই শহীদের সাথে জেসমিন আক্তারের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠায় আমাদেরকে পুলিশের ভয় দেখাতে থাকে। গত ২৮ এপ্রিল আমার স্ত্রী মুন্নিকে একা পেয়ে জেসমিন, সুমাইয়া, সাকিব, সাগর ও আবদুর রহমান সহ ৯ জনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে। এই ঘটনায় মামলা করতে চাইলে এসআই শহীদ বিভিন্নভাবে বাঁধা সহ ভয়ভীতি দেখায়। একপর্যায়ে মামলা রেকর্ড হলে আমাকে হয়রানী করার উদ্দেশ্যে ৬ মে জেসমিনের মেয়ে অপহরন হয়েছে বলে মামলা করে দেয়। মামলা দেওয়ার আগে আমাকে আসামী না করার জন্য এসআই শহীদ ২০ হাজার টাকা দাবী করলে আমি ৫ হাজার টাকা দিতে পারবো বলে বন্ধু সাকিলের সামনে ৪ হাজার টাকা এসআই শহীদকে দেই। এরপরেও আমাকে মামলার আসামী করে দিলে গ্রেপ্তার না করার জন্য আবার সাকিলের মাধ্যমে এসআই শহীদকে ৫ হাজার টাকা দেই। এই এসআই শহীদ এলাকায় ওসি প্রদিপের মত করতেছে, শুধু ক্রসফায়ার দিচ্ছে না আর বাকি সব করতেছে। আর জেসমিনের স্বামী বিদেশ থাকায় রাতেও এসআই শহীদের বাসায় গিয়ে থেকে যায় প্রায় সময়। এসবের কারণে জেসমিন আক্তারকে গ্রেপ্তারও করে না আমার মামলায়। তাদের এই অবৈধ সম্পর্কের বিষয়ে এলাকার গণ্যমান্য লোকজন সহ সকলেই জানার পরেও ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারে না।
সূত্রঃ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি।
0 মন্তব্যসমূহ