চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে সাংবাদিক মনসুর আলম বারবার পুলিশি নির্যাতনের শিকার


নিজস্ব প্রতিবেদক: বাঁশখালী নিউজের সম্পাদক ও প্রকাশক সাংবাদিক মনছুর আলম পুনরায় পুলিশি হয়রানিসহ নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বাঁশখালী থানা সূত্রে, গত ১৬ এপ্রিল রাতে মাদক সেবনের দায়ে আটক করে হাসপাতাল থেকে মাদক সেবনের সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে থানায় নিয়ে যায়। তবে এর আগেও তার সাথে এমন ঘটনা ঘটিয়েছিল বাঁশখালী থানা পুলিশ। পরিবারের দাবী, সাংবাদিক মনছুরের উপর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। হত্যাচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে পুনরায় মাদক সেবনের মিথ্যা নাটক সাজানো হচ্ছে।

গোপনে ও মিডিয়া সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী থানাধীন রামদাস হাট ফাঁড়িতে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বরত এসআই মো: শহীদের সাথে সাংবাদিক মনছুরের দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এ দ্বন্দ্বের জেরে ইতিপূর্বে ২৭ মার্চ সাংবাদিক মনছুরের বাইক গতিরোধ করে মাদক সেবনে রাস্তায় উশৃংখল করার মিথ্যা দায়ে এস আই শহীদ হাসপাতাল থেকে মাদক সেবনের সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে থানায় নিয়ে গেছিল। এই নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ সহ সাংবাদিক মহল প্রতিবাদ জানালে বাঁশখালী থানার ওসি মো: কামাল উদ্দিনও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ এপ্রিল রাতে সাংবাদিক মনছুরকে পুনরায় মাদক সেবন করে উশৃংখল করার মিথ্যা দায়ে গণপিটুনিতে হত্যার পরিকল্পনা করেন। হত্যা চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে থানা পুলিশ মাদকের নাটক সাজানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।

এদিকে মাদক সেবনের সার্টিফিকেট দেওয়ার বিষয়টি বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করে জানান, তাদের কাছে ডোপ টেস্ট করানোর মত কোন যন্ত্রপাতি নেই।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, রাত ১১টার পরপরই একটি সাদা মোটরসাইকেল যোগে দুজন আরোহী গুনাগরি বাজারের দিক থেকে আসতেছিল। সাধনপুর বদর পীর শাহ মাজারের গেইটের সামনে আসা মাত্র একদল মুখুশ দারী সন্ত্রাসী মোটরসাইকেল আরুহীদের উপরে হামলা চালায়।

সাংবাদিক মনছুরের মোটরসাইকেলে থাকা গুরা মিয়ার ছেলে আজিজ বলেন, সাংবাদিক মনছুরের সাথে বাইকে করে গুনাগরি থেকে বাড়িতে যাওয়ার পথে বদর পীর মাজাররের সামনে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালায়। আমাকে কয়েকজনে ধরে আটকে রেখে সাংবাদিক মনছুরকে পুড়াবাড়ি মুখি রাস্তার ভেতর দিকে তোলে নিয়ে বেঁধে তার পকেট থেকে সবকিছু ছিনতাই করে নিয়ে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে আর শরীরে মদ ডেলে দিয়ে গণপিটুনি দিচ্ছিল। এসময় গাড়ির জ্যাম লেগে মানুষের ভিড় জমতে থাকে। জনগণ গিয়ে সাংবাদিক মনছুরকে উদ্ধার করলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলে সাংবাদিক মনছুরকে নিয়ে যায়।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, মনসুর আলমকে মাদক দিয়ে মিথ্যা মামলায় চালান দিবে। এই ব্যাপারে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন জানান, একজন লোক মদ ও ইয়াবা নিয়ে অবস্থান করাকালে জনগণ গণপিটুনি দিচ্ছিল। কালীপুরের শাহাদাত চেয়ারম্যানের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। রামদাশ মুন্সীর হাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি পুলিশ পরিদর্শক সোলেইমান বলেন, আমি শুনেছি একজন এএসআই গ্রেফতার করেছে, আমি দেখতেছি। পরবর্তীতে সহকারী পুলিশ সুপার আনায়ারা সার্কেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি দেখতেছি। পরে তিনি থানা ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ওসির সাথে একমত পোষণ করলে, উনাকে পূর্বের ঘটে যাওয়া ঘটনা অবগত করে গণমাধ্যম প্রকাশিত সকল সংবাদের কপি দেওয়া হয়। অতঃপর তিনি বলেন আরেকটি নিউজ করে দেন। এ ঘটনায় পুলিশ সুপারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সাংবাদিক মনসুর আলমকে গ্রেপ্তারে বাঁশখালী সহ চট্টগ্রামের সাংবাদিক মহল তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। অবিলম্বে সাংবাদিক মনসুর আলমকে পুলিশি নির্যাতন বন্ধ ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ