পঞ্চগড় থেকে মোঃ কামরুল ইসলাম কামুঃ
অধিক লাভজনক হওয়ায় পঞ্চগড়ে এবার সরিষার আবাদ বেড়েছে।এ জেলার বিস্তৃণ এলাকা জুড়ে দেখা যায় সরিষার ক্ষেতে হলুদ রঙের সরোবর। ভোজ্য তেলে আমদানী নির্ভর কমাতে সরিষার উৎপাদন অনেকটাই সহায়তা করবে বলে ধারনা করা যায়।
পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার বিস্তৃণ জমিতে সরিষার ক্ষেতের ফলনে যেনো হলুদের সরোবর হয়ে ওঠেছে। জেলার পাঁচ উপজেলার মধ্যে দেবীগঞ্জে সরিষার আবাদ এবার সবচেয়ে বেশি হয়েছে। ওই উপজেলার দন্ডপাল, পামুলি, চেংঠিহাজরাডাঙ্গা, সুন্দরদিঘী ,দেবীডুবা ওটেপ্রীগঞ্জ সহ সবর্ত্র আবাদ হয়েছে সরিষার। এছাড়া ও আটোয়ারী উপজেলা সরিষার আবাদে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায, এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে সরিষার। যেখানে সরকারি ভাবে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৫ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হবে। সেখানে সরিষার আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে। গতবার ৪ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়।এদিকে দেবীগঞ্জ উপজেলাতেই ৩ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আটোয়ারী উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৭০ হেক্টর। পঞ্চগড় সদর উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছে ৬২৪ হেক্টর। তেতুঁলিয়া উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছে ৫১০ হেক্টর ও বোদা উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছে ৮৫০ হেক্টর।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বেংহাড়ি ইউনিয়নের প্রধানপাড়া কৃষক হাবিবুর রহমান তিনি দুই বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। আগে সরিষার আবাদ করেননি। তিনি বলেন একজন কৃষক আমাকে বলেছেন সরিষায় লাভ বেশি তাই এবার তিনি সরিষার আবাদ করেন।ওই কৃষক বলেন ১০কেজি সরিষায় ৪ কেজি তেল ও ৬ কেজি খৈল পাওয়া যায়। এক বিঘায় সরিষা উৎপাদন হবে ৬ মন। গতবার সরিষার মন ছিলো তিন হাজা টাকা। এক কেজি খৈলের দাম ৮০ টাকা। তার গরুর ফার্ম আছে এই খৈল গরুর খাবার হিসেবে ব্যবহার করবেন। হাবিবুর জানান, এই সরিষা তুলে তিনি বোরো চাষ করবেন।ওই ইউনিয়নের মানকপীরের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম জানান তিনি এবার চার বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছেন। গতবার তিন বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেন। তিনি বলেন ‘ এই সরিষা তুলে বাদাম লাগাবেন। একই ইউনিয়নের মমিন পাড়ার কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান এবার তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন।তিনি গতবার তিনবিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেন।এছাড়া সদর উপজলোর নতুনবন্দর গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম ও দুই বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছেন। তবে গতবার তিনি সরিষার আবাদ করেননি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পিরচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন ‘ সরিষা তুলে কৃষক এ সব জমিতে চীনা বাদাম ও বোরো আবাদ করবেন। প্রতিহেক্টর জমিতে এক দশমিক ৫ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদন হবে এবং তিন কেজি সরিষায় এক কেজি তেল হবে।এতে আমদানী নির্ভরতায় অনেকটা আর্থিক সাশ্রয়ী হওয়া যাবে।
0 মন্তব্যসমূহ