বিশেষ প্রতিনিধিঃ
মুজিব বর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছচাপানী ইউনিয়নের সোনাখুলীতে বাস্তবায়ন হয়েছে আশ্রয়ণ-২ নামের প্রকল্প। কিন্তু ছিন্নমূল পরিবারের বিধবা মহিলা জাহেদা বেগম ও তার স্বামী পরিত্যক্ত মেয়ে নাজমা বেগম সহ এক চালা জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করলে, এই প্রকল্পের আওতায় তাদের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি বরাদ্দের ঘর। জাহেদা বেগমের ক্ষোভ, আর কত গরীব হলে ঘর পামো? সরেজমিনে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছচাপানী ইউনিয়নে উত্তর সোনাখুলী বাবুপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়,এক চালা জরাজীর্ণ ঘরে,খাট না থাকায় মাটির উপর পাটি বিছিয়ে বসবাসের চিত্র। মৃত মজিবর রহমান এর স্ত্রী মোছাঃ জাহেদা বেগম (৬৫) দাম্পত্য জীবনে ৬ মেয়ে ১ ছেলে সন্তানের জননী। ৬ মেয়েকে অনেক কষ্ট করে মানুষের সাহায্য নিয়ে বিয়ে দিলে ও ১ মেয়ে স্বামীর সংসারে থাকতে না পেয়ে মায়ের কাছে এসে বোঝা হয়ে আছে।
এক ছেলে আনিছুর রহমান বিয়ে করে স্ত্রী ৩ সন্তান নিয়ে আলেদা বসবাস করেন। । ৬মেয়ে ১ছেলে সন্তান রেখে ৮ বছর আগে মারা যান স্বামী মজিবর রহমান । স্ত্রী-সন্তান রেখে পরপারে গেলেও, রেখে যায়নি কোন সহায় সম্বল জমি জায়গা শুধু রয়েছে একটি টিনের চালা,অন্যের জমিতে বসবাস। এ ভিটাতে জরাজীর্ণ একটি চালা ঘরে দুর্যোগ আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটে জাহেদা ও তার মেয়ে নাজমার । তবে জীবিকার তাগিদে জাহেদাকে ভিক্ষা করে,মেয়ে নাজমা অন্যের বাড়ি কাজ করে সেই উপার্জন দিয়ে কোনমতে সংসার চালাতে হচ্ছে তাকে।
এ মেয়েটাকে নিয়ে নিয়ে জীবনযুদ্ধ তার দরিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করে খেয়ে না খেয়ে কোনমতে বেঁচে আছেন জাহেদা বেগম। জাহেদা সারাদিন ভিক্ষা করে রাতে একটু ঠিক মতো ঘুমাতে পারেন না। কারণ, কখন যেন প্রাকৃতিক দুর্যোগ উঠে, এমন আতঙ্কে নির্ঘুমে কেটে যায় সারাটি রাত। সরকার দেয়া আশ্রয়ণ-২ নামের প্রকল্প তাদের নাম হয়তো উঠে নাই।এ প্রতিবেদকের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে অশ্রুসিক্ত কন্ঠে জাহেদা বেগম বলেন,বাবা খুব কষ্টের মাঝে আছি, স্বামী পরিত্যক্ত মেয়েকে নিয়ে অন্যের জমিতে বসবাস করি।জমির মালিক জায়গা ছাড়ার জন্য বারবার তাগিদ দিয়েছে। কোনঠে যাইম চিন্তায় বাচো না, কয় দিন আগে সরকারি ঘর দেইল (দিয়েছ)অনেকের কাছে গিয়াও ঘর পাং(পাই) নাই।সরকারি ঘর পাইলে বাকী জীবন মেয়েকে নিয়ে সেখানে কাটে দিনুং(দিলাম) হয়।আর কত গরিব হইলে সরকারি ঘর পামো,কবার (বলতে)পান।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান জাহেদা বেগম খুবেই অসহায় হতদরিদ্র ভিক্ষা করে সংসার চলে।তার মধ্যে এক মেয়ে স্বামীর সংসার ছেড়ে মায়ের কাছে এসে আছে।তাদের নিজের কোন জমি জায়গা নেই, অন্যের জমিতে জরাজীর্ন টিনের চালায় বসবাস করেন। ঘরে নেই কোন চকি বা খাট,এই শীতে ও মাঠির মেঝেতে পাটি বিছিয়ে বসবাস করেন।একটি সরকারি ঘর পাইলে তার দুঃখ কষ্ট দুর হত। আমরা এলাকাবাসী অসহায় হতদরিদ্র বিধবা জাহেদার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই তাকে একটি সরকারি ঘরের ব্যবস্থা দেন।
0 মন্তব্যসমূহ