খোরশেদ আলম:
কক্সবাজার গণপূর্ত কার্যালয়ের পাশ ঘেঁষে গণপূর্তের জমিতেই অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। সৈকত বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সহযোগিতায় একের পর এক ভবন উঠে যাচ্ছে সরকারি জমিতে। কার্যালয়ের পাশে সরকারি জমিতে প্রকাশ্যে ভবন নির্মাণ চলমান থাকলেও চুপ রয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলো। এসব স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ ও উচ্ছেদ করতে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদনও করা হয়েছে ইতিমধ্যে।
জানা গেছে- কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের বিপরীত পাশে গণপূর্ত কার্যালয়। এই কার্যালয়ের পাশে লাইট হাউজস্থ কটেজ জোন। লাইট হাউজের কটেজ জোনে আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে প্রায় ১০ একর জমিতে প্রতিযোগিতামূলক ভাবে অবৈধ বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। কটেজ জোনের পুরো জমি গণপূর্তের। এসব জমিতে কোন ধরণের স্থাপনা নির্মাণ অবৈধ। কিন্তু গণপূর্তের পাশ ঘেঁষে একের পর এক বহুতল স্থাপনা নির্মাণ করা হলেও তারা চুপ। বর্তমানে সরকারি এই জমিতে ৫টি বহুতল ভবন নির্মাণ চলছে প্রকাশ্যে।
এদিকে গত বছরের জুলাই মাসে ২৫ ও ৩১ মে দুই দফায় অভিযান চালিয়ে উক্ত স্থানে স্কেভেটর দিয়ে বেশ কয়েকটি অবৈধ নির্মাণাধীন ভবন উচ্ছেদ করেছিল কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)। সেই অভিযানের দেড় মাস যেতে না যেতেই ফের স্থাপনা নির্মাণ কাজ চালিয়ে শেষ করেছে লাইট হাউজের এসএস গেষ্ট হাউজ টিআর রির্সোট, ও সী কুইন কটেজের মালিক। এসময় জব্দ করা হয়েছিল নির্মাণ সরঞ্জামও। এর আগেও সেখানে কউক অভিযান চালিয়ে নির্মাণাধীন বহু স্থাপনা ভেঙে দিয়েছিল। কিন্তু ভেঙে দেওয়ার কয়েকমাস পর সেগুলো নির্মাণ কাজ চলে।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উচ্ছেদ অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বর্তমানে ৫টি ভবনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সৈকত বহুমুখী সমবায় সমিতি।
এদিকে কক্সবাজার গণপূর্ত বিভাগাধীন কো-অপারেটিভ হাউজিং এলাকায় গণপূর্ত কার্যালয়ের সীমানা দেয়াল ঘেঁষে অবৈধভাবে নির্মাণাধীন বহুতল ভবন নির্মাণ বন্ধ এবং অবৈধ দখল উচ্ছেদের লিখিত আবেদন জানিয়েছে কক্সবাজার সচেতন নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব মোর্শেদ আলম। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি এসব অবৈধ কার্যাক্রমের বিষয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, গণপূর্ত বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী কার্যালয়, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও কক্সবাজার পুলিশ সুপার বরাবরে আবেদন জানান তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে গণপূর্তের জমিতে স্থাপনা নির্মাণকারী হারুন উর রশিদ ও পানজ্জু নিউজ না করার অনুরোধ করেন।
মুঠোফোনে সৈকত বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আবু হানিফ বলেন- এসব স্থাপনা নির্মাণ নিয়ে অনেক বিষয় আছে। এসব বলা যাবে না ফোনে। একদিন সময় করে অফিসে আসিয়েন।
অভিযোগের বিষয়ে কক্সবাজার গণপূর্ত কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমতিয়াজ আহমেদের নাম্বারে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি।
এবিষয়ে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উপসচিব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু জাফর রাশেদ বলেন- এই পর্যন্ত গণপূর্ত কার্যালয়ের পাশে অবৈধভাবে নির্মিত প্রায় ১১ টি ভবন ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভেঙে দেওয়ার কিছু দিন পর সেগুলো আবার নির্মাণ করে। সেখানে নতুন করে স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে খবর নেওয়া হচ্ছে। আবারও অভিযান চালানো হবে।
0 মন্তব্যসমূহ