মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুরঃ
নীলফামারীর সৈয়দপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় রিক্সাভ্যানে থাকা আহত দুইজন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯ টায় শহরের উপকন্ঠ রাবেয়া ফ্লাওয়ার মোড় এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘটে। এনিয়ে গত ৪ দিনে সৈয়দপুরে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে রংপুরগামী একটি যাত্রীবাহী বাস ওই এলাকায় আসামাত্র বিপরীত দিক থেকে আসা একটি রিক্সা ভ্যানকে চাপা দেয়। এসময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটির সামনের দুটি চাকা ভেঙে মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ভ্যানচালক (৪২) ও নারী ভ্যানযাত্রী (৩৯) সহ বাসের প্রায় ২০ জন আহত হন। এদের মধ্যে মারাত্মক আহত অজ্ঞাত ভ্যানচালক ও নারী যাত্রীকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাদের অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে তাদেরকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কিন্তু সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বেলা ৩ টার দিকে প্রথমে অজ্ঞাত মহিলা ও পরে ভ্যানচালক মারা যান। এ রিপোর্ট লেখ পর্যন্ত কারও পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে বাসে থাকা আহত যাত্রীরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে গত ৪ দিনে তিনটি সড়ক দূর্ঘটনায় ৭ জনের মৃত্যু এবং প্রায় ৫৫ জন আহত হওয়ার ঘটনায় জনমনে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ট্রাক চাপায় তিনজন পরিবহন শ্রমিক নিহত ও একজন আহত হন। সৈয়দপুর বাসটার্মিনাল এলাকায় ওই ঘটনায় নিহতরা হলেন নীলফামারী জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য জাহাঙ্গীর ভাণ্ডারী (৬০), রবিউল ইসলাম (৫৫) ও আলম হোসেন (৫৫)। এর আগে গত রবিবার বিকেলে সৈয়দপুর বাইপাস সড়কের ধলাগাছ এলাকার মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালের সামনে যাত্রীবাহী বাস পথচারীকে চাপা দিয়ে পালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে ২ জন নিহত হন। এরা হলেন মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালের এম্বুলেন্স চালক পথচারি শহিদুল ইসলাম (৪৫) ও অন্যজন বাস যাত্রী মনসুর আলী (৫৯)।
ওইসব দূঘটনায় আহত হয়েছেন ৫৫ জন। পর পর এসব দূর্ঘটনা প্রসঙ্গে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক কামাল ইকবাল ফারুকী বলেন, নিয়ম না মেনে চালকরা বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর কারনে এধরনের সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। সড়ক দূর্ঘটনারোধে পরিবহন শ্রমিকদের সচেতন করতে সকলের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। এ ব্যাপারে নীলফামারী ট্রাফিক বিভাগের শহর ও যানবাহন পরিদর্শক আবু নাহিদ পারভেজ চৌধুরী বলেন, দূর্ঘটনা রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং চালক ও শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দেয়ার সার্বিক প্রচেষ্টা চালানো হয়। তারপরও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অনেকে বেপরোয়াভাবে যান চালানোর কারনে দূর্ঘটনা ঘটছে।
0 মন্তব্যসমূহ