সৈয়দপুরে জমি বেচা-কেনায় ভোগান্তির শিকার ক্রেতা- বিক্রেতারা


মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুরঃ
সৈয়দপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমির দলিল সম্পাদন (রেজিস্ট্রি) করতে এসে নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। নীলফামারীর রেকর্ড শাখার অনলাইনে সার্ভার সমস্যার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ফলে জমি রেজিস্ট্রিতে জটিলতা দেখা দেয়ায় সরকারের রাজস্ব আয় কমে যাচ্ছে। একই সাথে দলিল লেখকরাও তাদের আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

জানা যায়, চলতি বছরের আগস্ট মাসে নীলফামারী রেকর্ড শাখায় অনলাইনে সার্ভার সমস্যা দেখা দেয়। এ অবস্থায় ক্রেতা-বিক্রেতারা জমির দলিলের রেকর্ডপত্র উত্তোলন করতে না পারায় জমি বেচাকেনা ও দলিল রেজিস্ট্রি করতে পারছেন না। ভুক্তভোগীরা দিনের পর দিন সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ধর্না দিয়েও কোন ফল পাচ্ছেন না। এ কারণে সরকার প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জানতে চাইলে, সৈয়দপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক শাখাওয়াৎ হোসেন শামিম সরকার বলেন, মহামারী করোনা চলা অবস্থায় কঠিন সময় পার করেছি আমরা। বর্তমানে স্বাভাবিক অবস্থা চললেও অনলাইনে সার্ভার সমস্যার কারণে জমি রেজিস্ট্রি করানো যাচ্ছে না। ফলে ক্রেতা বিক্রেতাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে তারাও (ক্রেতা-বিক্রেতা) চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনলাইনে সার্ভার সমস্যা যদি দ্রুত সমাধান না হয় তাহলে মানুষজনের ভোগান্তি আরও চরমে উঠবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের হাজারীহাট এলাকা থেকে আসা ভুক্তভোগী সোলায়মান আলী বলেন, প্রায় ২ মাস যাবত আমার জমির মূল খতিয়ানের কাগজ নীলফামারী রেকর্ড শাখা থেকে তুলতে পারছি না। শুনেছি সেখানে নাকি অনলাইনে সার্ভার সমস্যা হয়েছে। এ কারণে জমি বিক্রয়ের জন্য দলিল রেজিস্ট্রি করতে পারছেন না বলে জানান তিনি। তার মতো একই কথা বলেছেন শহর ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা একাধিক ক্রেতা-বিক্রেতা।

সূত্র জানায়, সার্ভার সমস্যার কারণে হালনাগাদ জমির রেকর্ডপত্র না মেলায় সৈয়দপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গত ৩ মাস যাবত দলিল রেজিস্ট্রির সংখ্যা অর্ধেকে নেমেছে। যেখানে প্রতিমাসে প্রায় ৬শ দলিল রেজিস্ট্রি হতো, সেখানে তা নেমে এসেছে মাত্র আড়াইশতে। এদিকে সৈয়দপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসকে ঘিরে ৪৬ জন দলিল লেখক দলিল রেজিস্ট্রিতে যাবতীয় কাজ করে থাকেন। কিন্তু সার্ভারের সমস্যার সমাধান না হওয়ায় তারা পড়েছেন চরম অর্থ সংকটে। দলিল সম্পাদন না হওয়ায় তারা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাচ্ছে অনেক কষ্টে।

এ বিষয়ে কথা হয় সৈয়দপুর দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. একরামুল হক সরকারের সঙ্গে। তিনি সার্ভার সমস্যার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে সৈয়দপুরের দলিল লেখকরা জমি-বেচাকেনায় দলিল রেজিস্ট্রির যাবতীয় কাজ সম্পাদন করতে না পারায় সরকার প্রতি মাসে যেমন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি তারাও পড়েছেন অর্থ সংকটে। তিনি নীলফামারী রেকর্ড শাখায় অনলাইনের সার্ভার সমস্যার দ্রুত সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

নীলফামারী রেকর্ড শাখার সার্ভার সমস্যার বিষয়ে জানতে চাইলে, সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে জানান।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ