এন.এম. হামিদী, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
নীলফামারী কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যের ধারক মাদুরশিল্পে সহস্রাধিক পরিবারের নারী দেখছেন সফলতার মুখ। প্লাস্টিকের পণ্যের ভিড়েও টিকে রয়েছে অঞ্চলিক এ শিল্প। একসময় স্বল্পআয়ের গ্রামীণ নারীদের অস্থি মজ্জায় অন্যতম এ কুটির শিল্প মাদুর প্রসিদ্ধ করে তুলেছিল পুরো অঞ্চলকে। তবে পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, পুঁজির সংকট, দুর্বল বাজার ব্যবস্থা, প্রযুক্তি উন্নয়নে হাতের তৈরি মাদুর এ শিল্পের উপকরণ ও মোথার চাষাবাদ কমে যাওয়া আর মানুষজন প্লাস্টিকের মাদুর কম ব্যবহার করায় কদর বাড়ছে এ পেশায়।
পুরনো দিনের ছেড়ে দেওয়া কর্মজীবী নারীরা আবার ফিরছেন এ কাজে। সরেজমিনে গিয়ে জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাজে ডুমুরিয়া, সিট রাজিব, বাংলা বাজার, দুন্দীপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, নারীরা ঘরের বাইরে উঠানে কিংবা চালার নিচে দক্ষ ও কর্মমুখী হাতে দৃঢ় মনোবল নিয়ে নিখুঁতভাবে বুনন করছেন মাদুর। এ কাজে বসে নেই বৃদ্ধরাও।
এসময় দুন্দীপাড়া গ্রামের বড়ডুমুরিয়া গ্রামের অনেকে বলেন, আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন মাদুরশিল্পকে ধুকে ধুকে বেঁচে রাখেছি। আমাদের হাতের মাদুরের সুদিন আবার ফিরছে। অভাবি সংসারে নারী হিসেবে বাইরে কাজ করতে না পারায় বসে এ পেশা আমাদের কাছে খুবেই লাভজনক। আগাছা জাতীয় ছনগোত্রীয় মোথার প্যার (চারা) জমিতে রোপন করলে বছর পর বছর ফলন পাওয়া যায়|আগে ৫ হাত মাদুর বিক্রি করে ১২০ টাকা আয় হতো। এখন সেই মাদুর ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা বিক্রি করে ৫০০ টাকা আয় হচ্ছে। আজও কিশোরগঞ্জে মাদুর পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্যকে ধারণ করে বিভিন্ন গ্রামে তৈরি হচ্ছে। পাইকাররা বাড়ি বাড়ি ঘুরে আমাদের হাতের মাদুর সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারসহ বিভিন্ন বিক্রি করে তারাও লাভবান হচ্ছে|
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ্ মো. আবুল কালাম বারী পাইলট জানান, এ অঞ্চলের ঐতিহ্য মাদুরের এখনো কদর রয়েছে। তাই এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করে শিল্পকর্মে নারীদের আত্মস্বাবলম্বী করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
0 মন্তব্যসমূহ