মো. মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপরঃ
এদিকে নির্বাচন উপলক্ষে শহরের বাস টার্মিনাল এলাকা পোস্টারে পোস্টারে ছেঁয়ে গেছে। সব প্রার্থীর ছবি ও মার্কা শোভা পাচ্ছে গোটা টার্মিনাল জুড়ে। নির্বাচন পরিচালনায় চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাহমুদুল হাসান। সংগঠন সূত্রে জানা যায়, তিন বছর মেয়াদী কমিটির ১৮টি পদে ভোটাররা তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। নেতৃত্বের নির্বাচনী লড়াইয়ে মোট ৪৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন।
তবে নির্বাচনী যুদ্ধে আলোচনায় আছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের চার প্রার্থী। এর মধ্যে সভাপতি পদে সর্বাধিক আলোচিত হেভিওয়েট প্রার্থী দেওয়ান মুজিবুদ্দৌলা জকি। তিনি মোটর প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ পদের আরেক প্রার্থী মো. মমতাজ আলী লড়ছেন ‘চাকা’ প্রতিক নিয়ে। দেওয়ান জকি সংগঠনের সহ-সভাপতি পদে থেকে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন। নীলফামারী শহরের এই প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদের ছোট ভাই। এই পরিচয়ে তিনি সর্বত্র বেশী পরিচিত।
সভাপতি পদে অপর প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মমতাজ আলী পোড় খাওয়া প্রবীণ পরিবহন শ্রমিক নেতা। তিনি সংগঠনের প্রয়াত সভাপতি আখতার হোসেন বাদলের ঘনিষ্টজন হিসাবে পরিচিত। সংগঠনের আন্দোলন সংগ্রামে তার রয়েছে অগ্রনী ভূমিকা। নির্বাচনে এই দুই প্রার্থীই ভোটারদের আলোচনায় আছেন। ফলে ভোটের সমীকরণে দুই প্রার্থীই জয়ী হওয়ার আশায় রয়েছেন।
অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে দুই প্রার্থী একে অপরের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি। এর একজন সংগঠনের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন। তিনি ‘ঘড়ি’ প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপর প্রার্থী মোহাম্মদ আলী লড়ছেন ‘মোমবাতি’ প্রতিক নিয়ে। ফলে শক্ত এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পর থেকেই ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন সব প্রার্থী। গোটা জেলা মিলিয়ে এবার মোট ভোটারের সংখ্যা ৩ হাজার ১২ জন। এসব ভোটারের মধ্যে সৈয়দপুরে ভোটার সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। ফলে মূল দুই পদে প্রার্থীর জয়-পরাজয় আঞ্চলিকতা এবং দলীয় প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি উড়িয়ে দেয়া যায় না।
এনিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, যোগ্য প্রার্থীকেই তারা ভোট দেবেন। যারা শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করতে পারবেন তাদেরকেই বেছে নেবেন তারা। নির্বাচনের ভোট যুদ্ধে অন্যান্য পদে আরো যারা প্রার্থী হয়ে লড়ছেন তারা হলেন কার্যকরী সভাপতি পদে মো. হারুন-উর-রশিদ (টেলিফোন) ও মো. জিকরুল হক (কুঁড়েঘর), সহ-সভাপতি পদে লড়ছেন মো. দেলোয়ার হোসেন বাবলু (খেজুরগাছ), মো. ছাইদুল ইসলাম (মই), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মো. মোফাজ্জল হোসেন (গাভী), মো. গোলাম মোস্তফা (চেয়ার) ও মো. মমিনুর রহমান (জগ)।
সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে মো. আফজাল হোসেন (টিয়াপাখি), মো. আকবর আলী আকুয়া (আনারস), মো. আলমগীর কবির (নলকূপ), ওয়াজেদ আলী (শাপলাফুল) ও মো. জাহাঙ্গীর আলম (কাস্তে)। কোষাধ্যক্ষ পদে মো. মনছুর আলী (বই) ও মুহম্মদ রাশেদ আলী (তালা)।দপ্তর সম্পাদক পদে এফাজ উদ্দিন সরকার (দোয়াত কলম) ও মো. আব্দুল গনি ইসরাইল (প্রজাপতি), সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মো. আব্দুর রশিদ (উড়োজাহাজ), মো. মাসুদ রানা(চাবি) ও আশিকুর রহমান লেলিন (সাইকেল)। সড়ক সম্পাদক (আন্তঃজেলা রুট) পদে মো. শফিকুল ইসলাম (মশাল) ও মো. সোরাব হোসেন (হাতি)। সড়ক সম্পাদক (অভ্যন্তরীণ রুট) পদে মো. জাহাঙ্গীর আলম (আম) মো. স্বপন (স্টিয়ারিং) ও জাহেদুল ইসলাম (পাখা)। প্রচার সম্পাদক পদে মো. আব্দুল জলিল (তলোয়ার) ও মো. আব্দুস সামাদ (হরিণ)। সমাজ কল্যাণ সম্পাদক পদে মো. লেবু মিয়া (টেবিল) ও মো. হাফিজুল ইসলাম (কলস)।
সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মো. জাহেদুল ইসলাম মানিক (মাছ), অনাথ অধিকারী (তারা), মমতাজ আলী (হারমোনিয়াম) ও পলাশ হোসেন (গিটার)। ক্রীড়া সম্পাদক পদে মো. স্বপন (চিরুনী) ও মো. সাবের আলী (ফুটবল)। এছাড়া সংগঠনটির কার্যকরী ৩টি সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১১ জন প্রার্থী। এরা হলেন মো. আইনুল হুদা (দোয়েল পাখি), মো. আরিফ আল মাহমুদ (বালতি) মো. আবেদ আলী (ঢেঁকি), মো. জাহাঙ্গীর আলম (অটোরিক্সা), মো. আশিকুর রহমান (ঘুড়ি), মো. ডাবলু (চশমা), মো. তামহিদ হোসেন (রিক্সা), মো. রবিউল ইসলাম (পদ্মফুল), মো. মোকছেদুল ইসলাম (টেলিভিশন), রবিউল ইসলাম (ট্রাক) ও নিমাই চন্দ্র রায় (কড়াই)।
প্রসঙ্গত. নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি. নং- ২২০) এ নির্বাচন গত ৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মহামারী করোনার কারণে নির্বাচনটি স্থগিত করা হয়। পরে মহামারি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নির্বাচন কমিশন ৩০ অক্টোবর নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করেন।
0 মন্তব্যসমূহ