নীলফামারীতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড


সুভাষ বিশ্বাস, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

নীলফামারী ডিমলা উপজেলা স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন, মুখে বিষ ও ঘাষ মারা কীটনাশক ছিটিয়ে হত্যার দায়ে মোঃ আলমগীর হোসেন (৩০) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, ৭জন কে বেকসুর খালাশের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার পর জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্র্যাইব্যুনালের বিচারক মোঃ মাহাবুবর রহমান এ আদেশ দেন। দন্ডপ্রাপ্ত আলমগীর হোসেনর বাড়ী ডিমলা উপজেলার দক্ষিণ সোনাখুলি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে। এ আদেশের সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। দন্ডিত আলমগীর হোসেন মামলা দায়ের হওয়ার পর থেকেই কারাগারে আটক ছিলেন। 

মামলার বিবরণিতে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ৮ সেপ্টেম্বর মধ্য রাতে যৌতুকের পাওনা ৫০ হাজার টাকার জন্য স্ত্রী সুমি আক্তারকে শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে। এক পর্যায়ে চুলের মুঠি ধরে খাটের সাথে মাথায় আঘাত দিলে মাথা ফেটে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারান ও পরে মারা যান। এই ঘটনা ঢাকতে স্বামী আলমগীর সুমি আক্তারের গলায় ওড়না পেচিয়ে ঘরের চালের তীরে বেধে ঝুলিয়ে রাখেন এর পর চিল্লাহাল্লা করে প্রতিবেশিদের ডাকতে থাকেন সুমি আতœহত্যা করেছে। পাশ্ববর্তী রাজ্জাক ও মান্নানের পরামর্শে লাশ বিছানায় নামিয়ে রেখে মুখে বিষ ঢেলে দেন ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ঘাষ মারা কীটনাশক ছিটিয়ে দেন এতে সুমির চেহারা ঝলশে যায় ও তারা প্রচার করতে থাকে সুমি বিষ খেয়ে মারা গেছে।

সরকারী পক্ষের আইন জীবি পিপি এ্যাডভোকেট রমেন্দ্রনাথ বর্দ্ধন বাপ্পী মামলাটি পরিচালনা করেন। উভয়ের পক্ষের যুক্তি র্তক ও স্বাক্ষী ও প্রমানের ভিত্তিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্র্যাইব্যুনাল-২ এর বিচারক ১১(ক)/৩০ দন্ডবিধি ২০১ ধারায় আলমগীর হোসেনকে মৃত্যুদন্ড ও ২০ হাজার টাকার জারিমানা আদেশ দেন। আসামীর পক্ষের আইনজীবি এ্যাডভোকেট মোঃ বরকত হোসেন বলেন, ৮ জন আসামীর মধ্যে ৭ জন আসামী বেকসুর খালাস পায় ১নং আসামী ১১(ক) ধারায় মৃতুদন্ডের আদেশ দেয় আদালত। ১নং আসামীর রায়ে সংক্ষুদ্ধ বিধায় মাননীয় আদালতে আপিল দায়ের করা হবে।  

এ বিষয়ে সুমি আক্তারের বাবা মোঃ খতিবর রহমান বাদী হয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- নাশিনিদ: ৩/১৯ ও জিআর- ১৭৬/১৬ মামলাটি তদন্ত করে পিবিআই। মোঃ আলমগীর হোসেন ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন সুমি আক্তারকে ২০১৪ সালে ২৫ ডিসেম্বর। তাদের বিয়ে পারিবারিক ভাবেই হয়। সুমির বাবা মোঃ খতিবর রহমান বিয়ের পন বাবদ ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেবার প্রতিশ্রুতি দেয়। বিয়ের সময় ১ লক্ষ টাকা যৌতুক হিসাবে পরিশোধ করেন বাকী ৫০ হাজার টাকা ছিল। বিয়ের ২ বছর পার হতে না হতেই যৌতুকের বাকী ৫০ হাজার টাকা সুমির আক্তারের বাবা পরিশোধ করতে না পারায় জীবন দিলেন সুমি আক্তার।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ