মোঃ কামরুল ইসলাম কামু ,পঞ্চগড়ঃ
পঞ্চগড়ে করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের জন্য বরাদ্দে সরকারের প্রণোদনার টাকা প্রদানের তালিকায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রাণিসম্পদ অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। যাদের অধিকাংশরই ডেইরি খামার নেই এমন অসংখ্য ব্যক্তি এই টাকা উত্তোলন করেছেন। বাদ পড়েছেন প্রকৃত অনেক ক্ষতিগ্রস্থ খামারি । পঞ্চগড় সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে সরকারের এই উদ্যোগ বাধাগ্রস্থ হওয়ায়, সুষ্ঠ তদন্ত করে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান বঞ্চিত খামারিরা।
অনুসন্ধানে জানা যায় , ডেইরি খামারি না হয়েও যারা টাকা পেয়েছেন- পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের নাছিমা, লাইলি বেগম, জুলফিকার আলী , জয়তুন নেছা ,আবু সাত্তার , সদর ইউনিয়নের আব্দুর রউফ,কামাত কাজলদিঘীর মোসাদ্দেকুর রহমান ,তবিবর রহমান , উম্মে কুলছুম , এমন অসংখ্য ব্যক্তি রয়েছে যাদের ডেইরি খামার নেই কিন্তু পেয়েছে সরকারের দেওয়া প্রণোদনার টাকা। খামারি হওয়ার পড়েও প্রণোদনা পাননি- সদর ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর, আবু তাহের , হাজী লিটন, এমন অসংখ্য ক্ষতিগ্রস্থ খামারি রয়েছে করোনা কালীন সময়ে পাননি সরকারের কোন প্রণোদনা।
অফিস সূত্রে জানা যায়, এলডিডিপি প্রকল্পের মাধ্যমে খামারিদের প্রণোদনার আওতায় আনতে গত বছরের আগস্ট মাসে, পঞ্চগড় সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম অধিদপ্তরে তালিকা প্রেরণ করেন । প্রথম পর্যায় ৩৬৪ জন খামারিকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা প্রণোদনা দেয়া হয় । প্রতিটা ক্ষতিগ্রস্থ খামারিকে তিন ক্যাটাগড়িতে ভাগ করে ব্রয়লার ও লেয়ার ১১২৫০ থেকে ২২৫০০ , দুগ্ধ খামারি ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার, সোনালি ৪৫০০ থেকে ৯০০০ টাকা, হাঁস ৩৩৭৫ থেকে ১১২৫০ টাকা।
বকশীগঞ্জ এলাকার পল্লী চিকিৎসক (ভেটেরিনারি) জুলফিকার আলী খামারি না হওয়া সত্বেও প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন । জানতে চাইলে তিনি বলেন , গরু আছে অন্যজনকে পালতে দিছি । কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের তবিবর রহমানের দেশী গরু রয়েছে কয়েকটি। প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন। কিভাবে পেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন তালিকা তৈরিকারীর সাথে ভাল সম্পর্ক।
সাহাবী জোত এলাকার জয়তুন ও আবু সাত্তারের গরু আছে তবে গাভী নাই । পেয়েছেন প্রণোদনার টাকা । কামাত কাজলদিঘী এলাকার মোসাদ্দেকুর রহমানের খামার আছে তবে গাভী নাই পেয়েছেন প্রণোদনার টাকা। তবে তালিকায় নাম উঠাতে প্রাণি সম্পদ অফিসের মাহামুদুল হাসান কে দিতে হয়েছে ২ হাজার ৫০০ টাকা । তবে মাহমুদুল হাসান অভিযোগ অস্বীকার বরেন। গাভী ক্যাটাগরির ৫৫ নম্বরের উম্মে কুলছুমকে ডিয়াবাড়ী এলাকায় খোঁজ করে পাওয়া যায়নি । এমন আরো অনেক নাম থাকতে পারে অভিযোগ খামারিদের ।পঞ্চগড় জেলার দুগ্ধ খামারির সভাপতি আলমগীর হোসেন জানান, ২৫ জন খামারির জন্য প্রণোদন দেয়া হবে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার শহিদুল ইসলাম। পরে শুনেছি যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সবাই পাবে। বিষয়টি আমাদের কাছে গোপন করেছেন তিনি। বিভিন্ন জনের কাছে টাকা নেয়ার অভিযোগও শোনা গেছে বলে জানান তিনি।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোছা. মিলি আরা বলেন ‘ আমরা তালিকা তৈরি করেছি তবে টাকা আমরা দেইনি।।পঞ্চগড় সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, এবিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি, আপনারা অভিযোগ দেন দেখি আমি ব্যবস্থা নিতে চাই।
0 মন্তব্যসমূহ