মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুরঃ
নীলফামারীর সৈয়দপুরে দুইটি নকল লাচ্ছা সেমাই কারখানা আবিস্কার করা হয়েছে। আজ রবিবার চলা বিএসটিআইয়ের ভেজাল বিরোধী অভিযানে শহরের উত্তর নিয়ামতপুর (দেওয়ানীপাড়া) ও পার্বতীপুর রোড় এলাকায় ওই কারখানা দু'টির সন্ধান পায় অভিযান পরিচালনা করা দলটি। বিএসটিআইয়ের অনুমোদন না দিয়ে সংস্থাটির মানচিহ্ন (লোগো) ব্যবহার ও নকল লাচ্ছা সেমাই তৈরি এবং বাজারজাত করার দায়ে দুই কারখানা মালিকের ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এছাড়াও উল্লিখিত কারখানা দু'টির উৎপাদন করা প্রায় দুই মেট্রিক টন লাচ্ছা সেমাই জব্দসহ কারখানা সীলগালা করা হয়। জানা গেছে, চলতি রমজান মাসে আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সৈয়দপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্যক মৌসুমী ও নকল লাচ্ছা সেমাই কারখানা গড়ে উঠেছে। শহরের অলিগতিতে গড়ে উঠা কারখানাগুলোতে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করে অত্যন্ত নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে নকল ও ভেজাল লাচ্ছা সেমাই তৈরি করে নামীদামী ব্র্যান্ডের কোম্পানির মোড়কে সে সব বাজারজাত করা হচ্ছিল।
এছাড়া বিএসটিআইয়ের অনুমোদন না থাকলেও এ সব কারখানায় তৈরি লাচ্ছা সেমাইয়ের মোড়কে সংস্থাটির মানচিহ্ন (লোগো) ব্যবহার করা হয়। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আজ রবিবার দুপুরে বিএসটিআই রংপুর বিভাগীয় কার্যালয় পক্ষ থেকে সৈয়দপুর শহরে ভেজাল বিরোধী ওই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে শহরের উত্তর নিয়ামতপুর দেওয়ানিপাড়ায় তাজা লাচ্ছা সেমাই নামে বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন আজাদ ফুড প্রডাক্টস নামে একটি লাচ্ছা সেমাই কারখানার সন্ধান মিলে। ওই কারখানায় তৈরি লাচ্ছা সেমাই সুন্দর ও ঝকঝকে প্যাকেটে মোড়কজাত করে তাজা লাচ্ছা সেমাই নামে বাজারজাত করার ঘটনাটি হাতেনাতে ধরা পড়ে।
পরে এ ঘটনায় বিএসটিআইয়ের অনুমোদন না নিয়ে সংস্থার লোগো ব্যবহার ও নকল লাচ্ছা সেমাই তৈরির দায়ে কারখানা মালিক আজাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় সেখানে তৈরি দুই টন লাচ্ছা সেমাই জব্দ করে কারখানার একটি গোডাউন সীলগালা করে দেয়া হয়। বিকেলে শহরের পার্বতীপুর রোড এলাকায় একটি বন্ধ থাকা কমিউনিটি সেন্টার অভিযান চালিয়ে আরও একটি নকল লাচ্ছা সেমাই কারখানা সন্ধান মিলে। ওই কারখানাটিতে লাচ্ছা সেমাই তৈরি করে কুটুম স্পেশাল লাচ্ছা সেমাই নামে প্যাকেটজাত করে বাজারজাত করা হচ্ছিল।
অথচ প্যাকেটের গায়ে প্রস্তুতকারক হিসেবে লেখা হয় ‘দানিয়াল ফুড প্রডাক্টস, মিস্ত্রীপাড়া, সৈয়দপুর নীলফামারী। সুত্র জানায় কুটুম লাচ্ছা সেমাই কারখানা মালিক অনেকদিন আগেই মারা গেছেন। অথচ ওই কারখানায় তৈরি সেমাইয়ের মোড়কে বন্ধ কারখানার নাম, ঠিকানা ও বিএসটিআইয়ের মানচিহ্ন ব্যবহার করে তা বাজারজাত করা হচ্ছিল। এ সব ঘটনায় ওই নকল লাচ্ছা সেমাই কারখানার মালিক মো. আব্দুল খালেকের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ভ্রাম্যমান আদালত। একই সঙ্গে কারখানাটি সীলগালা করা হয়।
বিএসটিআইয়ের এসব ভেজাল বিরোধী অভিযানে নেতৃত্ব দেন সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. রমিজ আলম। এ সময় বিএসটিআইয়ের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের ফিল্ড অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন ও সৈয়দপুর থানার উপ পরিদর্শক খালেদ ফিরোজ নয়নসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
0 মন্তব্যসমূহ