আব্দুল মালেক, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
অগ্নিসংযোগ, তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী এবং বসতবাড়ির আসবাব পত্র ভাংচুর করে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিসাধন করায় নীলফামারী জেলা পরিষদের সদস্য ফেরদৌস পারভেজ(৩৮) কে ০১নং আসামী করে নীলফামারী ডিমলার বিজ্ঞ আমলী আদালতে ১৩জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের। গত সোমবার (০৮ মার্চ) চাঁদাবাজি, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এনে এই মামলা দায়ের করেছেন এ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ পাটোয়ারী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এফ আই আর করে আসামী গ্রেফতারের জন্য ডিমলা থানার ওসিকে প্রেরন করেন।
বাদী ডিমলা উপজেলা নাউতারা ইউনিয়নের সোনামনির ডাঙ্গা নিজপাড়া গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তিনি মামলার আরজীতে উল্লেখ করেন, আসামীগন সন্ত্রাসী, মাস্তান, চাঁদাবাজি, দাঙ্গাবাজ, জবরদখলকারী, ভূমিদস্যু এবং পরধন লোভী। তারা আগুন খাওয়া গ্রুপের বাহিনী হিসেবে এলাকায় বেশ পরিচিত। তাহাদের ভয় ও দাপটে এলাকায় কেহ কোন কিছু বলার সাহস পায় না। বাদীর পিতা প্রায় ২২ বছর যাবত উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের সোনামনির ডাঙ্গা বাজারে মিল-চাতাল, দোকানপাট ও বসতভিটা নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে।
পিতার পৈত্রিক সম্পত্তির অংশে বাদী নিজেই নতুন বাড়ি ও দোকান ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করলে আরজী ভুক্ত ১নং আসামী ৩ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করলে গত ৬মার্চ শনিবার দুপুরে মাইক্রোবাস ও মটরসাইকেল যোগে সন্ত্রসী কায়দায় বসতবাড়ির আসবাব পত্র ভাংচুর করে। বাদী মামলার আরজীতে উল্লেখ করেন, আসবাব পত্র ভাংচুরে প্রায় ৫ লক্ষাধীক টাকার ক্ষতি সাধন করে এবং রান্নাঘর ও দোকান ঘরের দেয়ালে পেট্রোল ছিটিয়ে অগ্নিসংযোগ করে দ্রুতগতিতে তারা পালিয়ে যায়।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, ডোমার উপজেলার চান্দিনাপাড়া সেভেন ষ্টার ক্লিনিক সংলগ্ন নুর ইসলামের ছেলে নুরনবী(৪৬), চৌধুরীপাড়া মীর্জাগঞ্জের মৃত. মোকাব্বর হোসেনের ছেলে জুয়েল(৪৫), গোমনাতী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ(৪৭), ডিমলা উপজেলার ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সায়েম(৩০), দক্ষিন তিতপাড়ার বিমল চন্দ্র রায়ের ছেলে রাম চন্দ্র(৩০), সর্দ্দারহাট মৃত. আরা উদ্দিনের ছেলে হালু মাস্তান(৪০), বাবুরহাট গোলাম রব্বানীর ছেলে লিটন(৩৫), লিয়াকত আলীর ছেলে এনামুল হক(৩৫), নাউতারা নিজপাড়া মৃত. আছির উদ্দিনের ছেলে আবু বক্কর(৪৫), রুপাহারার দুলাল হোসেনের ছেলে ইদ্রিস আলী(৩৮), সুন্দওখাতার সাহাব উদ্দিন আনছারীর ছেলে হামিদুল(৩৭) এবং ডিমলা প্রধান পাড়ার গজেন্দ্রর ছেলে বুদা(৩৫)।
বাদী এ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ বলেন, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চলার প্রাক্কালে পুলিশ সুপার মহোদয়কে অবগত করলে ডিমলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিদর্শন পূর্বক বাড়ি ও দোকান ঘর ভাংচুর এবং আগুনে পুড়িয়ে যাওয়া জিনিস পত্রের ছবি তুলে নিয়ে যান। আমি একজন আইনজীবি, ন্যায় বিচার পাবো ইনশাআল্লা। কারন আমার পাশে অনেক আইনজীবিরা আছে এবং থাকবে। তিনি বলেন, ডিমলায় আগুন খাওয়া বাহিনীর গ্রুপের ভয় ও দাপটে কেউ সাহস পায়না সত্য কথা বলতে। সাধারন মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে বা হুমকি-ধামকী দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে এবং অনেক নিরীহ মানুষকে পথে বসিয়েছে।
এদিকে ১নং আসামী ফেরদৌস পারভেজ মুঠোফোনে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত চাঁদাবাজীর অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। আমরা সেদিন তাদের জমির বিরোধ মেটানোর জন্য সালিশ বৈঠকে গিয়েছিলাম। নাউতারা ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম লেলিন মুঠোফোনে বলেন, ০৭ শতক জমি নিয়ে মামলার বাদীর সাথে ডোমার মীর্জাগঞ্জের এক ব্যক্তির সাথে বিরত চলছিলো। তাই আমার ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ ছিলো, কোথাও কোন ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ হয়নি এতটুকুই জানি, আর এছাড়া আর বেশী কিছু বলতে পারবোনা।
মামলা সম্পর্কিত বিষয়ে ডিমলা থানা অফিসার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত বিজ্ঞ আদালত থেকে এধরনের কোন মামলার নথি আসে নাই সেজন্য কিছুই বলতে পারবো না।
0 মন্তব্যসমূহ