নয়ন দাস, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামে দাওয়াত খাওয়ানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে ছানোয়ার হোসেন লিচু (২৩) নামে এক টেকনিশিয়ানকে হত্যার দায়ে দুলাল হোসেন নামে (৩২) এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল মান্নান আসামির উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন। পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্রাহাম লিংকন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।দণ্ডপ্রাপ্ত দুলাল হোসেন জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের কোমরভাঙ্গী (পাখিউড়া) গ্রামের ফরজ আলীর ছেলে। নিহত ছানোয়ার হোসেন লিচু একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, নিহত ছানোয়ার রৌমারী উপজেলার সায়েদাবাদ বাজারে মোবাইল সার্ভিসিং ও কম্পিউটার কম্পোজের ব্যবসা করতেন। দুলাল হোসেনের ভাই সাইফুল ইসলামও ওই বাজারে একই ব্যবসা করতেন। ছানোয়ার নিহত হওয়ার ৩-৪ মাস আগে সাইফুল ইসলামের ওপর রাতের অন্ধকারে হামলার ঘটনা ঘটে। এ জন্য সাইফুলের পরিবার ছানোয়ারকে সন্দেহ করে। এরই জের ধরে ২০১০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে দাওয়াত খাওয়ানোর কথা বলে দুলাল হোসেন ছানোয়ারকে নিয়ে পাশের রাজীবপুর উপজেলার বদরপুর গ্রামের একটি মাঠে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে এবং তার দুই হাতের কবজি ভেঙে দেয়। ছানোয়ারের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজীবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় পরের দিন নিহতের বাবা দোলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রাজীবপুর থানায় দুলাল হোসেন, তার ভাই সাইফুল ও বাবা ফরজ আলীসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর মামলার বিচারকাজ শেষে মঙ্গলবার আসামিদের উপস্থিতিতে আদালত অভিযুক্ত দুলাল হোসেনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন। মামলার অপর আসামিদের অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের বেকসুর খালাস দেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পিপি আব্রাহাম লিংকন এবং আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন এনামুল হক চৌধুরী।
0 মন্তব্যসমূহ