রংপুর মিঠাপুকুরে ধর্ষক ভয়ংকর বিষু বাহিনীর ভয়ে গ্রাম ছাড়া ধর্ষিতার পরিবার


শরিফা বেগম শিউলী রংপুর প্রতিনিধিঃ
রংপুরে বন্ধকী জমির স্ট্যাম্প উদ্ধার করতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে গৃহবধু নুরবানু। মামলা হওয়ার ১মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি মিঠাপুকুর থানা পুলিশ। এ দিকে ধর্ষক ভয়ংকর বিষু বাহিনীর ভয়ে গ্রাম ছাড়া ধর্ষিতার পরিবার।  

ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পশ্চিম মুরাদপুর গ্রামে।মামলা ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পশ্চিম মুরাদপুর গ্রামের মৃত ইসমতুল্লাহ মিস্ত্রির ছেলে তোফাজ্জল হোসেন’র নিকট একই গ্রামের রিক্সা চালক জয়নাল আবেদিন প্রায় ৫ বছর পূর্বে ৩শ টাকার স্ট্যাম্পে লিখিত করে দুই লক্ষ টাকায় ৬৬ শতক জমি চাষাবাদের জন্য বন্ধক নেয়। তারপর আবারও তোফজ্জল ঐ জমির উপর জয়নাল আবেদিনের কাছে ২০ হাজার টাকা করে মোট চল্লিশ হাজার টাকা গ্রহন করে কিন্তু এ টাকার কোন স্ট্যাম্প লিখে না দিয়ে আজ কাল করে টালবাহানা করতে থাকে।

এ দিকে তোফাজ্জল’র নিকট থেকে নতুন স্ট্যাম্প তৈরী করে নিয়ে দেয়ার কথা বলে ধর্ষিতা নুরবানুর নিকট থেকে মূল স্ট্যাম্প ধর্ষক আবু তাহের ও ভয়ংকর সন্ত্রসী বিষু তাদের হেফাজতে নেয় এবং স্ট্যাম্প জিম্মি করে তারা রিক্সা চালকের স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় ধর্ষন করে। মুল স্ট্যাম্পকে জিম্মি করে ধর্ষণের বিষয়টি নুরবানু তার স্বামী জয়নাল আবেদিনকে জানালে বিষয়টি গড়ায় স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানের কাছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার বাদশা মিয়া উভয় পক্ষকে নিয়ে সালিশ বৈঠকে মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে অবশেষে গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ইং মিঠাপুকুর থানায় ভিকটিম নুরবানু নিজেই বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন-২০২০ সংশোধনী-০৩ আইনের ৯ এর ১/৩০ ধারায় তোফজ্জল, আবু তাহের ও বিষুকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মিঠাপুকুর থানার মামলা নং-৩৬।

এলাকাবাসী আরও জানান, ধর্ষক বিষু  নুরবানুর সাথে ধর্ম মেয়ের সম্পর্ক তৈরী করে তাকে এভাবে গণধর্ষণ করে। এ দিকে ভয়ংকর বিষুর ছোট ভাই মেহেদী হাসান জানান আমার বড়ভাই ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।ভিকটিম নুরবানুর স্বামী রিক্সা চালক জয়নাল আবেদিন সাংবাদিকদের বলেন, আমি গরিব মানুষ রিক্সা চালিয়ে অনেক কষ্ট করে টাকা উপার্জন করে তোফাজ্জলের কাছে জমি বন্ধক নিয়েছি। এরা তিন জন ষড়যন্ত্র করে আমার স্ত্রীকে জিম্মি করে ধর্ষণ করেছে আমি এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। 

মামলার একমাস হয়ে গেছে এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আমরা আসামী ধরার চেষ্টা করছি। বিষুর লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীরা আমাকে খুঁঝছে। ভয়ে আমি আমার শশুর বাড়িতে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মিয়া বলেন, বিষু ঐ এলাকার মধ্যে বিভিন্ন সন্ত্রাসীমূলক কর্মকান্ড করে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আছে। আমরা ধর্ষণের এ বিষয়টি নিয়ে এলাকার মেম্বারসহ বসে ছিলাম ধর্ষিতা নুরবানুর কাছে টাকা পয়সা নিয়েও খাইছে জানতে পারছি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বৈরাতীহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ  নাজির হোসেন’র কাছে আসামীদের গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,  আসামী বিষু হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছে। বাকি আসামীদের বিষয়ে দেখতেছি কি করা যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ