ওবাইদুল ইসলাম, গাইবান্ধাঃ
আশ্রয়নের অধিকার শেখ হাসিনার উপহার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে মতবিনিময় ও প্রেস কনফারেন্স বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসন আয়োজিত এই প্রেস কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. সাদেকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছা. জেবুন নাহার, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুর রাফিউল আলম প্রমুখ। প্রেস কনফারেন্সে উল্লেখ করা হয়, ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুজিববর্ষে ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সকল ভুমিহীন ও গৃহহীন মানুষের বাসস্থান নিশ্চিতকল্পে ‘মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দেশের সকল ভুমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ প্রদান নীতিমালা ২০২০ প্রণয়ন করা হয়েছে। উক্ত নীতিমালা অনুযায়ী জুন/২০২০ তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে ভুমিহীন ও গৃহহীন ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬শ’ ২২টি পরিবারের তালিকা করা হয়েছে।
মুজিবর্ষে এই প্রকল্পের আওতায় গৃহ নির্মাণ উপযোগী ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদানপূর্বক প্রথম পর্যায়ে ৬৬ হাজার ১৮৯টি পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হয়। উক্ত বরাদ্দকৃত অর্থে ৬৬ হাজার ১শ’ ৮৯টি পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই আরও ১ লাখ গৃহের বরাদ্দ প্রদান করা হবে। এছাড়া পর্যায়ক্রমে দেশের সকল ভুমিহীন-গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহ প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এ আশ্রয়ন-২ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় একক গৃহ নির্মাণের সামগ্রিক কার্যক্রম সমন্বয় করছে। মুজিববর্ষে ২১টি জেলার ৩৬টি উপজেলায় ৪৪টি প্রকল্প গ্রামে ৭শ’ ৪৩টি ব্যারাক নির্মাণের মাধ্যমে ৩ হাজার ৭১৫টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, একই সাথে ৬৪ জেলায় ৬৯ হাজার ৯০৪ জন ভুমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদানের ঘটনা বিশ্বে এটাই প্রথম।
এরই ধারাবাহিকায় প্রথম পর্যায়ে গাইবান্ধা জেলার সাতটি উপজেলায় ৮৪৬টি গৃহ নির্মাণের জন্য ১৪ কোটি ৪৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। বরাদ্দকৃত অর্থ দ্বারা গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ১০৫টি, সুন্দরগঞ্জে ২৭২টি, গোবিন্দগঞ্জে ১২০টি, সাদুল্যাপুরে ১৭৯টি, ফুলছড়িতে ৭৫টি, সাঘাটায় ৩৫টি ও পলাশবাড়ীতে ৬০টি গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও গাইবান্ধা সদর, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলায় নবনির্মিত ৪টি ব্যারাকে ২৮০টি ভুমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। আগামী ২৩ জানুয়ারি শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভুমিহীন-গৃহহীন ছিন্নমুল অসহায় মানুষের জন্য গাইবান্ধা জেলায় নির্মিত ১ হাজার ১২৬টি সহ দেশব্যাপী ৬৯ হাজার ৯০৪টি গৃহ প্রদান কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে নির্মিত ঘরের চাবি, জমির কবুলিয়ত-দলিল, নামজারী খতিয়ান, ডিসিআর এর কপি এবং ঘর প্রদানের সনদ সমন্বয়ে সজ্জিত ফোল্ডার আনুষ্ঠানিকভাবে সুবিধাভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। অনুষ্ঠানটি গণভবন থেকে জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যমগুলো সরাসরি একযোগে সম্প্রচার করবে। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসন, গাইবান্ধার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে জেলায় ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদানের মাধ্যমে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম সর্বসাধারণের মাঝে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর এ মানবিক উদ্যোগকে সফল ও স্বার্থক করতে প্রেস কনফারেন্সে অংশীজনসহ গাইবান্ধা জেলার সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিদের সর্বাত্মক সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করা হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ