জনবলে সংকটে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল। নামের সাথে চিকিৎসা সেবা মিলেছে না। দীর্ঘদিন ধরে এমন অব্যবস্থাপনা চলে আসছে। ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠি কোন সুফল পাচ্ছেনা। ১০০ শয্যার এই হাসপাতালটিতে আউটডোরে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০০ রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। অন্তত ১৪০ রোগী ইনডোরে চিকিৎসা নেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স না থাকায় তাদের বেসরকারি ক্লিনিকের আশ্রয় নিতে হচ্ছে।
অনেক রোগীকে রংপুর অথবা ঢাকায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। ফলে নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। দরিদ্র মানুষ অর্থের অভাবে রংপুর, ঢাকায় চিকিৎসা না নিতে পেরে চরম সংকটের মুখোমুখি হন। অবকাঠামোগত সংকটও রয়েছে এই হাসপাতালে। হাসপাতালটির ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষার সময় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। অনেক সময় হাসপাতালের ভিতরে পানি ওঠে। সে সময় পরিবেশগত সংকটে পড়ে। পরিচ্ছন্নতার দিক দিয়ে এই হাসপাতালের সুনাম থাকলেও পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী নেই।
জানা যায়, মাত্র চারজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করছে। কর্তৃপক্ষ বলছেন অন্তত ২০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী প্রয়োজন। অচিরেই পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পদ সৃষ্টি করে নিয়োগ দেওয়া জরুরি। কর্মরত চিকিৎসকের সংখ্যা মাত্র ১১, নার্স ৮৬ জন। এ হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট থেকে মেডিকেল অফিসার পর্যন্ত চিকিৎসকের অনুমোদিত পদ ৩৬। এর মধ্যে ২৫টি পদই শূন্য। তাই সদর উপজেলার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো থেকে মেডিকেল অফিসার এনে রোগীর চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
১৩০ জন নার্স সেবা প্রদান করার কথা থাকলেও মাত্র ৮৬ জন নার্স বিভিন্ন শিফটে দায়িত্ব পালন করছেন। পর্যাপ্ত ওয়ার্ড-বয় নেই। নেই নিরাপত্তাকর্মী। ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন আছে কিন্তু টেকনিশিয়ান নেই। আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন আছে কিন্তু সোনোলোজিস্ট নেই। কর্মরত বিভিন্ন ওয়ার্ড-বয় বা নার্সদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে এই মেশিনগুলো পরিচালনা করা হচ্ছে।
ফলে অনেক সময় নির্ভুল রিপোর্ট পাচ্ছেন না রোগীরা। ইনডোর রোগীরা অভিযোগ করেন হাসপাতাল থেকে সরবরাহকৃত খাবারের মান ভালো নয়। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় এই হাসপাতালে অতিরিক্ত নয়জন ডাক্তার সেবা প্রদান করছেন। তাছাড়া সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ইতোমধ্যে।
0 মন্তব্যসমূহ