খাদেমুল মোরসালিন শাকীর, নীলফামারীঃ
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখানা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের প্রতিবন্ধী ডালিম চন্দ্রের (৪৫) টাকা উদ্ধার করে তাকে ফেরত দিয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা বেগম। জানা গেছে, ২০১৯ সালের জুন হতে ২০২০ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত ওই প্রতিবন্ধীকে ভাতা প্রদানের অনুমোদন দেয় সমাজ সেবা অধিদপ্তর।
কিন্তু সেই প্রতিবন্ধীর ভাতা উত্তোলনের বই কৌশল করে ইউনিয়ন পরিষদের ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য ঊষা রানী (৩০) ও তার স্বামী স্বপন চন্দ্র রায় ভাতাভোগী ডালিম চন্দ্রের ভাতা ১ (এক) বছরের ৭শ ৫০ টাকা করে ৯ হাজার টাকা সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজস করে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। পরে ডালিম চন্দ্র রায় মহিলা সদস্যের স্বামী স্বপন চন্দ্রকে বইয়ের কথা বললে গত নভেম্বর মাসের ১৭ তারিখ তাকে বই দেন। স্বপন চন্দ্রকে টাকার কথা বললে তিনি বলেন,ব্যাংকে টাকা লাগলে পেয়ে যাবেন।
প্রতিবন্ধী ডালিম চন্দ্র তার বইয়ে দেখতে পান যে কিশোরগঞ্জ সোনালী ব্যাংক থেকে গত ২৭ সেপ্টেম্বর জুন ২০১৯ থেকে জুলাই ২০২০ পর্যন্ত টাকা প্রদান করেন। কিন্তু স্বপন চন্দ্রকে ডালিম আবার জিজ্ঞেস করলে স্বপন চন্দ্র একই কথা বলে চলে যান। পরে তিনি কোন ভাবে টাকা উদ্ধার করতে না পেরে ২ ডিসেম্বর প্রেস ক্লাব কিশোরগঞ্জে এসে মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানান এবং তার বক্তব্য সাংবাদিকরা ভিডিও রেকর্ড করে ডালিম চন্দ্রকে বাড়ী পাঠিয়ে দেন। ২ ডিসেম্বর রাতে মহিলা সদস্যের বাড়ীতে যান দৈনিক দেশ কালান্তর রংপুর ব্যুরো প্রধান খাদেমুল মোরসালিন শাকীর,আমাদের অর্থনীতির উপজেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান ও যায়যায় দিনের প্রতিনিধি আহসানুল হক চন্দনসহ কয়েকজন সংবাদকর্মী।
স্বপন চন্দ্রকে ডাক দিলে মহিলা সদস্য ঊষা রানী বাড়ীর বাহিরে বের হয়ে বলেন,তার স্বামী বাহিরে আছেন। তার (ঊষা রানী) কাছ থেকে তার স্বামী স্বপন চন্দ্রের মোবাইল ফোনের নম্বর নিয়ে তাকে ফোন করে প্রেস ক্লাবে ডাকলে তিনি ক্লাবে আসেন। প্রতিবন্ধীর টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে তিনি অকপটে স্বীকার করে বলেন যে, আমার স্ত্রী ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য কোটায় ৪টা প্রতিবন্ধীর তালিকা দিয়েছেন এবং প্রথম বারের টাকাটা শুধু তুলে নিয়েছি। তারা তো সারা জীবন টাকা উত্তোলন করে ভোগ করবেন।
বিষয়টি ২১ ডিসেম্বর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা বেগমকে বিষয়টি অবহিত করলে টাকা উদ্ধার করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বস্ত করেন সাংবাদিকদের। তারই আলোকে সোমবার দুপুরে মহিলা সদস্য ঊষা রানী বিষয়টির জন্য ক্ষমা চেয়ে টাকা ফেরত দেন।
এ ব্যাপারে ঊষা রানীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন,কার কার কাছ থেকে টাকা আমার স্বামী নিয়েছে তা আমার জানা নেই। চাঁদখানা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান হাফি বলেন,বিষয়টি আমিও সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছি। তবে স্বপন তো আমার পরিষদের কেউ না। তাকে আমি কিভাবে বলি টাকা নেয়ার বিষয়ে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সংবাদকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আপনাদের সহযোগীতা না পেলে আজ প্রতিবন্ধীর টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হতো না। এভাবে প্রশাসনকে আপনারা সহযোগীতা করলে কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে অনিয়ম,দূর্নীতি উঠে যাবে।
0 মন্তব্যসমূহ