রতন কুমার রায়, স্টাফ রিপোর্টার:
নীলফামারীর ডোমারে প্রতারনার মাধ্যমে টাকা খোয়ানো নারীরা টাকা ফেরত পেতে সোমবার দুপুরে শহরের রেলঘুন্টির মোড়ে দু’ঘন্ট ব্যাপী সড়ক অবরোধ করে। এর আগে সকালে এক ঘন্টা ব্যাপী উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করার পরেও কোন বিচারের আশ্বাস না পাওয়ায় উক্ত স্থানে শতাধিক নারী অবরোধে অংশ গ্রহন করেন।
পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিনা শবনম, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক সরকার ও ওসি মোস্তাফিজার, অবরোধস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে আইনি সহায়তার আশ্বস্থ করলে অবরোধ তুলে নেন তারা। জানাযায়, বিভিন্ন লোভনীয় প্রস্তাবে সহাস্রাধীক নারীকে সংগঠনের কর্মী বানিয়ে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় নীলফামারীর ডোমার উপজেলা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
মাত্র দেড় মাসের মধ্যে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। গত শনিবার সকালে ৩৫ লক্ষ টাকা নিয়ে সংগঠনের ক্যাশিয়ার ও দুইজন ট্রেইনারসহ ৩জন পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে নারী কর্মীরা ডোমার সাহাপাড়া এলাকার সংগঠনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে কতৃপক্ষের কাউকে না পেয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। দুপুরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এরপর ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও পরিচালক নিজেরাই থানায় গিয়ে বিষয়টি অবহিত করেন। সহস্রাধীক নারী কর্মীরা থানায় উপস্থিত হয়ে টাকা ফেরত চান। সবার টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক কোটি টাকার চেক ও নগদ ছয় লক্ষ টাকা উপজেলা সমবায় অফিসার নুরুজ্জামান খানের নিকট জমা ও মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান সংগঠনের সভাপতি মানিক হাসান মালিক ও পরিচালক মামুন রহমান।
প্রসঙ্গত: ডোমারের স্বল্প ও অশিক্ষিত নারীদের টার্গেট করে প্রায় দেড় মাসে আগে গড়ে উঠে বাংলাদেশ অনলাইন শপিং সার্ভিসেস। সেখানে ৮০ হাজার টাকা জমা দিলে সাত দিন পর একটি দেড় লক্ষ টাকার দামের মটরসাইকেল ও ১৫ দিন পর জমাকৃত সেই ৮০ হাজার টাকাও ফেরত দেওয়া হবে।
সেখানে এ রকম আরো অনেক লোভনীয় অফার দিয়ে অশিক্ষিত নারীদের দৃষ্টি আকর্ষন করে। এতে অসচেতন নারীরা হুমড়ি খেয়ে বিভিন্ন অফার গ্রহণ করে। হঠাৎ করে একসাথে এতো নারীর উপস্থিতিতে এলাকাবাসী ও সাংবাদকর্মীরা উক্ত সংগঠনের বৈধতার কাগজপত্র দেখতে উদগ্রীব হয়।
কতৃপক্ষ কৌশলে সময়ক্ষেপন করে নাম পরিবর্তন করে গত ১ ডিসেম্বর সমবায় কার্যালয় হতে ডোমার বাজার ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি লিঃ নামে একটি নিবন্ধন নেয়। যার নিবন্ধন নম্বর-২৪। সংগঠনের প্রতারিত কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা নুরুজ্জামন কোন তদন্তই করে নাই। ওই নিবন্ধন নম্বরই প্রতারকদের বৈধতা দেয় বলে তারা অভিযোগ করে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিনা শবনম জানান ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেওয়ার সকল প্রকার চেষ্টা করছি। ওসি মোস্তাফিজার রহমান বলেন, অবরোধকারীদের আইনি সহায়তার আশ্বস্থ করি ও অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করলে তারা অবরোধ তুলে নেন।
0 মন্তব্যসমূহ