মাহমুদুল হাসান , পীরগঞ্জ( রংপুর)ঃ
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার এক মানষিক প্রতিবন্ধি মওলা মিয়া আজও লোহার শিকলে আবদ্ধ । তার জীবন কাটছে এক পায়ে শিকল বাধা অবস্থায় । এ অবস্থা ২/৩ বছর ধরে নয়, দীর্ঘ প্রায় ৩০ টি বছর ধরে সমাজের আর ১০ জনের মত বাঁচার অধিকার থেকে বঞ্চিত মওলার কাছে যেন এ পৃথিবীটা বড়ই বিভীষিকাময় ।
পীরগঞ্জ উপজেলার ভেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের মৃত্যু মোজাব উদ্দিনের পুত্র মওলা (৬২)। তারা ৫ ভাই অপর ভাইয়েরা হচ্ছে গোলাপ, সোনা, মনুহার, । মওলার বয়স যখন ১৮ । তখন একজন স্বাভাবিক তরতাজা যুবক ছিলেন । সে বয়সে মওলা হঠাৎ করে ঢাকায় চলে যায় । ঢাকায় অবস্থান কালে কে বা কাহারা মওলার মাথায় একটি ঢিল ছুড়ে মারলে সেটি মওলার মাথায় লাগলে মওলা মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে ।
এর পর মওলাকে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করা হলেও সুস্থ হননি । তিনি মানষিক ভাবে অসুস্থ থাকায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ব্যক্তিকে উপদ্রব করত । অর্থাভাবে তার পুরোপুরি চিকিৎসাও করানো সম্ভব হয়ে উঠেনি । তাই প্রায় ৩১ বছর আগে মওলার ভাইয়েরা তার পায়ে লোহার শিকল পড়িয়ে বিভিন্ন স্থানে বেঁধে রাখতেন ।
সর্ব শেষ গত ১১বছর পুর্বে তাদের বাড়ীর অনতিদুরে এক জঙ্গলে মওলার পায়ে লোহার শিকল পড়িয়ে আম গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে । আর তখন থেকেই মওলা পুরো পুরি শিকল বন্দি । অবশ্য মওলার ভাইয়েরা সেখানেই মওলাকে খাবার দেয়া সহ মওলার খোঁজ খবর রেখেই চলছেন । শিকল পড়া অবস্থায় শিকলের দৈর্ঘ্য নিদৃষ্ট ৫ হাত দুরত্বেই মওলার গোসলের ও একটা গর্তে পায়খানারও ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে ।
কয়েকটা টিন দিয়ে তার থাকার জন্য নির্মান করা হয়েছে একটা টিনের ছাপড়া । আর এ ভাবেই ৩১ টি বছর ধরে মওলার জীবন কাটছে একটি আম গাছে শিকলে বন্দিবস্থায় ও নিঃসঙ্গতায় এক জঙ্গলে । যতদিন বেঁচে থাকবেন হয়তবা এ ভাবেই জীবন কাটাতে হবে মওলা কে । মওলার ভাই গোলাপ মিয়ার মতে তাদের যা কিছু ছিল মওলার চিকিৎসার জন্য তাদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে ।
কারও সহায়তায় আমার ভাই সুস্থ্য হলে সে আর ১০ জনের মতো স্বাভাবিকভাবে জীবন কাটাতে পারতো। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম সাধ্যমত সহযোগীতার আশ্বাস দিয়ে বলেন ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক । উল্লেখ্য, প্রায় ১ বছর পুর্বেও বিভিন্ন পত্রিকায় এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হলেও গোলাম মওলার অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে । মওলার কপালে এখনো মেলেনি কোনো সরকারী সহায়তা ।
0 মন্তব্যসমূহ