মিজানুর রহমান মিলন স্টাফ রিপোর্টারঃ
পুলিশ সুপার সেজে বিভিন্নজনের কাছে প্রতারণা করা ভূয়া পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ওরফে নীরব (৩৭) ধরা খেয়েছেন। নীলফামারী জেলা পুরনো সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমানের দিক নির্দেশনায় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সৈয়দপুর শহরের নিয়ামতপুর শুটকিবন্দর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে নীলফামারী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল।
ওই ভূয়া পুলিশ সুপার নীরব এরআগে ৮ জনের কাছ থেকে বিকাশে টাকা আদায়ের পর নীলফামারী পুলিশ সুপারের নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্মের চেষ্টাকালে তাঁকে গ্রেফতার হয়। নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার চৌরাপাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে ভূয়া এসপি নীরব বর্তমানে চট্টগ্রামের মধ্য হালিশহর মাইজপাড়া এলাকায় বসবাস করে আসছে।
মঙ্গলবার বিকেলে নীলফামারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভূয়া পুলিশ সুপার প্রতারক মোস্তাফিজুর রহমানের প্রতারণার বিষয়টি তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বিপিএম, পিপিএম।
এ সময় তিনি বলেন, আমার ফেসবুক থেকে ছবি সংগ্রহ করে ভুয়া এ্যাকাউন্ট খুলে সে। বিষয়টি জানার পর শুরু করা হয় তদন্ত। এরই মধ্যে আমার নাম ভাঙ্গিয়ে মানুষজনের কাছে টাকা আদায়ের চেষ্টা করলে তাকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ গোপন সংবাদে জানতে পারেন প্রতারক নীরব সৈয়দপুর শহরে অবস্থান করছে।
পরে ওই প্রতারকের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নিয়ামতপুর শুটকিবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাঁর দেয়া তথ্যে দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকা থেকে তার সহযোগি চাচাতো বোন সুফিয়া বেগমকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, প্রতারক নীরব ডিআইজিসহ বিভিন্ন জেলার এসপির নামে ভুয়া ম্যাসেঞ্জার খুলে সরকারের বিরুদ্ধে কুরুচি পুর্ণ মন্তব্য, দেশদ্রোহী কমেন্ট, লাইক শেয়ার করা এমন ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ফোনে যোগাযোগের পর মামলা থেকে বাঁচাতে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে আসছিল।
আর এসব কাজে সহায়তা করতো তাঁর চাচাতো বোন সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সুফিয়া বেগম। বিকাশে টাকা আদায়ের জন্য সুফিয়ার ০১৩০১১৭৭৯৩০ নম্বরটি ব্যবহার করতো সে। পরে তারা দুজনে টাকা ভাগ করে নিতো। প্রতারক নীরব ভোলা জেলা থেকে পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শকের (এসআই) ছবি ব্যবহার করে ভূয়া ফেসবুক আইডি খুলে প্রতারণার কাজ শুরু করে।
এঘটনার একটি মামলায় ২৩ মাস কারাবন্দি থাকার পর জামিনে মুক্ত হয়ে আসে। এনিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাথেও সম্পর্কের অবনতি হয়। পরে আবারও ভুয়া আইডি খুলে প্রতারণার কাজ শুরু করে। সে ৬৮ জনের কাছ থেকে ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা আদায় করে। যা বিকাশের তথ্যে প্রাথমিকভাবে পাওয়া গেছে।
পুলিশ সুপার মোখলেছুর রহমান বলেন এ ঘটনায় আরও যারা জড়িত রয়েছে তাদের সবাইকে গ্রেফতার করা হবে। এদিকে আজ মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতার দু’জনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত এবিএম আতিকুর রহমান, সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ হারুন-অর- রশিদ উপস্থিত ছিলেন।
0 মন্তব্যসমূহ