আঃমতিন সরকার গাইবান্ধাঃ
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। বিগত ৯ বছর আগে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখনও জনবল রয়েছে ৩১ শয্যার। জনবল সংকট থাকার পরেও ৩ জন স্টাফকে ডেপুটেশনে অন্যত্র দেয়া হয়েছে। এদিকে হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন নাই, ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে থাকায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে চরাঞ্চল বেষ্টিত দরিদ্র প্রীড়িত এই অঞ্চলের মানুষ সরকারি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ফুলছড়ি উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী সাঘাটা ও সদর উপজেলার চরাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসার একমাত্র আশ্রয় স্থল এই ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে কোন চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না এতদঞ্চলের মানুষ।
জানা গেছে, ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১১ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখনো জনবল রয়েছে ৩১ শয্যার। হাসপাতালটিতে ৯ জন ডাক্তারের স্থলে মাত্র ৪ জন ডাক্তার কর্মরত রয়েছে। আবাসিক মেডিকেল অফিসার, ৫ জন জুনিয়ার কনসালট্যান্টের মধ্যে গাইনী এন্ড অবস, মেডিসিন, সার্জারি ও এনেসথেসিয়া কনসালটেন্টের পদ শূন্য রয়েছে।
আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদশুন্য থাকায় একজন মেডিকেল অফিসারকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ডাঃ সালেহীন কাদেরী নামে অন্য আর একজন মেডিকেল অফিসার ২০০৬ সালের ৬ ফেব্র“য়ারি থেকে অদ্যাবধি অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছে।
দীর্ঘদিন হলো মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল) পদটি ফাঁকা পরে রয়েছে। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) পদে একজন কর্মরত থাকলেও অন্যজন ডেপুটেশনে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত রয়েছে। একজনকে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনে দেয়া হয়েছে।
সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকের পদ দুইটি, নার্সের ১৪টি পদের মধ্যে ২টি, প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারিসহ মাতৃস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে ৪ জন মিড ওয়াইফের ৩ জন নিয়মিত কাজ করছেন। পরিসংখ্যান পদটি, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের ৩টি পদের মধ্যে ২টি, ফার্মাসিস্ট ও স্টোর কিপারের ২টি পদ, স্বাস্থ্য সহকারীর ৮টি, এমএলএসএস এর পদ ফাঁকা রয়েছে ২টি। বাবুর্চি ২টি পদের মধ্যে ১টি এবং ওয়ার্ড বয়ের পদ, পরিচ্ছন্ন কর্মীর ৫টি পদের মধ্যে ৩টি পদই শূন্য রয়েছে।
এছাড়া একজনকে ডেপুটেশনে দেয়া হয়েছে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে। এছাড়া জুনিয়র মেকানিককে দেয়া হয়েছে ফার্মাসিস্টের দায়িত্ব এবং একজন স্বাস্থ্য সহকারীকে দেয়া হয়েছে স্টোর কিপারের দায়িত্ব।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো. রফিকুজ্জামান জানান, হাসপাতালে জনবল চেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারপরেও স্বল্প সংখ্যক ডাক্তার ও সাপোর্ট ষ্টাফ নিয়ে সাধ্যমত সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। ইতিপূর্বে বিভিন্ন কারণে হাসপাতালটিতে অচলাবস্থা তৈরি হলেও বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত আরএমও, চিকিৎসক এবং নার্সসহ অন্যান্য সকলের আন্তরিক সেবাদানের মাধ্যমে এ হাসপাতালের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরে এসেছে।
0 মন্তব্যসমূহ