মো. আবু নাঈম, পঞ্চগড়:
পঞ্চগড়ে কমলা ও চা চাষের সাফল্যের পর নতুন মাত্রায় যুক্ত হয়েছে আরো একটি পুষ্টি ও ঔষুধী গুন সমৃদ্ধ ড্রাগণ ফল চাষ। ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসসহ নানা রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত এ ফল দেখতে যেমন লোভনীয় খেতেও তেমন সুস্বাদু।
ঔষধি গুণে গুণান্বিত, রসালো এবং মুখরোচক এই ড্রাগন ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে লাভবান হয়েছেন আটোয়ারী উপজেলার কৃষক হিরু বর্মন।
উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের শিকটিহাড়ী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, হিরু বর্মনের ৬৫ শতক জমির উপর সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকা ৪০০ সিমেন্টের খুটি জড়িয়ে বেয়ে উঠেছে এক হাজার ৬০০ ড্রাগন গাছ। গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে বিদেশী এই ফল।
ড্রাগন বাগানের এই নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছে দর্শনার্থীরা। অপর দিকে, দামী ও লাভজনক এই ফলের জন্য দুর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন ব্যবসায়ীরাও। জমি থেকেই ৩০০ টাকা প্রতি কেজি দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন তারা।
হিরু বর্মন গত তিন বছর আগে পরীক্ষা মূলক ভাবে ড্রাগন চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরই সাফল্যের মুখ দেখতে পান তিনি। আর দ্বিতীয় বছরে ৬৫ শতক জমি থেকে তিনি ড্রাগন ফল বিক্রি করেন প্রায় ১২ লাখ টাকা।
এবছরও ফলন সন্তোষ জনক। তবে করোনাভাইরাসের কারণে দাম নিয়ে শংশয় রয়েছে। হিরু বর্মন বলেন, দীর্ঘদিন অস্ট্রেলীয়ায় প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে এসে অলস সময় পার করছিলাম। ইউটিউবে ড্রাগন চাষ সম্পর্কিত ভিডিও দেখে আগ্রহ বাড়ে।
পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি নাটোরে এক নার্সারিতে ড্রাগনের চারা গাছ পাওয়া যায়। সেখান থেকে চারা গাছ এনে এই বাগানটা সাজিয়েছি। হিরু আরও বলেন, আমার বাগান দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে এখন অনেকেই নতুন করে ছোট বড় বাগান করছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, পঞ্চগড়ের মাটি ড্রাগন চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় কৃষকেরা ঝুকছেন। ইতোমধ্যে জেলায় বেশ কয়েকটি ছোট বড় বাগান গড়ে উঠেছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, কৃষি অফিস থেকে হিরু বর্মনকে সবসময় বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে। পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল মতিন বলেন,
কৃষকের আয় বৃদ্ধি ও পুষ্টির চাহিদা পূরনে ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ করণ, মাঠ পর্যায়ে তদারকি এবং এর চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত করণের ফলে জেলার অনেক কৃষকে ড্রাগন চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
0 মন্তব্যসমূহ