।পর্ব ১।
পাচঁ বছর আগের কথা, তিলে তিলে গড়া ছাদের বাগানটাতে অনেক
ফুল ফুটেছিলো সেবারের শীতকালে। মৌমাছি, প্রজাপতি, ফড়িং এসে বসতে শুরু করলো
ফুলগুলোতে। আর আমি মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা শুরু করে দিলাম। কিন্তু
ছবিগুলো দিয়ে চোখের ক্ষুধা মিটছিলো না কিছুতেই, তাই বিগিনার লেভেলের ডিএসএলআর
ক্যমেরা; নাইকন ডি ৫৩০০ কিনে নিলাম। ক্লিক করতে করতে শেখা শুরু, প্রথমে
স্থির বস্তু, যেমন ফুল, ফল। তারপর প্রজাপতি, ফড়িং। মানুষের ছবিও তুলেছি অনেক।
অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে পাখিদের ছবি তোলার ইচ্ছাটা বাড়তে থাকলো। ইচ্ছেটাকে
বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য সেমি প্রফেশনাল ক্যমেরা নাইকন ডি ৮১০ এবং একটি ১৫০-৬০০ এম
এম এর টেলিজুম লেন্সকে সঙ্গী বানিয়ে নিলাম বেশ কিছুদিন পর; শুরু হলো জুম করে দূরের
বস্তুকে কাছে এনে ছবি তোলার পালা - পাখির ছবি তোলার যাত্রা। কিন্তু পাখিরা
খুবই চঞ্চল, বেশির ভাগ ছোট ছোট পাখিগুলোই তিড়িং-বিড়িং করে লাফাতে থাকে। আমি
ওদের পিছু ছুটি ক্যমেরা হাতে। ছুটতে ছুটতে বেশ কিছু ছবি তুলে ফেলেছি, জেনেও নিয়েছি
পাখিগুলোর পরিচয়। বেশিরভাগ ছবি নাটোর শহরের অদূরে বিলাঞ্চলগুলো থেকে তোলা। এই
ছবিগুলো শেয়ার করার সাথে সাথে পখিগুলোকে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই সবার সাথে, আর সে
লক্ষ্যেই আজকে বলবো দু’টো পাখির কথা।
(নাটোরের অদূরে বড়ভিটা এলাকা থেকে তোলা ছবি)
বাংলদেশের সর্বত্র, বিশেষ করে রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, নওগাঁ
এলাকায় এদেরকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দেখা যায়। এছাড়াও দক্ষিনের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে
এদের দেখা মেলে। ডিম না থাকলে এরা জোড়ায় জোড়ায় ঘুরে বেড়ায়, সঙ্গি-সঙ্গিনী কেউ
কাউকে রেখে বেশি দুরে যায় না। এরা সুগভীর সুরঙ্গ করে বাসা বানায় এবং ডিম পাড়ে,
বাসার বাইরে দিকে সাপের খোলস ঝুলিয়ে অভিনব কায়দায় নিজেদের ডিমকে সুরক্ষিত রাখে
পাকরা মাছরাঙা।
অনান্য মাছরাঙাদের মতই এরা
পানির উপরে শুন্যে স্থির থেকে ভারসাম্য রক্ষা করে ডানা ঝাপটে, এরপর প্রচন্ড বেগে
পানিতে ঝাপ দিয়ে মাছ সংগ্রহ করে। মাছ এদের প্রধান খাদ্য হলেও বিভিন্ন পোকমাকড়,
ব্যঙ্গাচি, ফড়িঙের লার্ভা - এগুলোও খায়। এই প্রজাতির মাছরাঙাদের অরিজিন আফ্রিকা
মহাদেশে। IUCN (International Union for Conservation of Nature)- এর তালিকা অনুযায়ী এরা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নুন্যতম
বিপদগ্রস্ত।
0 মন্তব্যসমূহ