মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুর প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক ইউনিয়নে লকডাউন করা ২০টি বাড়িতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাদ্যসামগ্রীর বস্তা পৌঁছে দিচ্ছেন এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নে লকডাউন করা বাড়িগুলোতে দিয়েছেন ওইসব খাদ্যসামগ্রী। ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নাম হচ্ছে মো. জুয়েল চৌধুরী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৈয়দপুর উপজেলার উল্লিখিত ইউনিয়নের খালিশা বকশীপাড়ার যুবক মো. হাফিজুল হক বিটুল (৩৮) নারায়ণগঞ্জে একটি হোটেলে ম্যানেজার হিসেব কর্মরত ছিলেন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে তিনি অসুস্থ অবস্থায় গত ৪ এপ্রিল সৈয়দপুরের বাড়িতে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে রংপুর মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে পরীক্ষায় তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ ধরা পড়ে। এ অবস্থায় সৈয়দপুর উপজেলা প্রশাসন বকশীপাড়া গ্রামের তার বাড়িসহ আশপাশে ২০টি বাড়ি লকডাউন করেন। এতে করে গোটা গ্রামের মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তখন থেকে গ্রামের লোকজন লকডাউন করা বাড়িগুলোর আশপাশেও যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। এতে করে বাড়িতে অবস্থানকারীদের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছানো নিয়ে সংকট দেখা দেয়। এ অবস্থায় ওই বাড়িগুলোর সদস্যদের জন্য খাদ্য সহায়তা দিতে এগিয়ে আসেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান মো. জুয়েল চৌধুরী। তিনি নিয়মিত ওই বাড়িগুলোতে বসবাসকরা মানুষজনের খোঁজখবর রাখছেন। একইসাথে তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজ হাতে খাদ্যসামগ্রীও পৌঁছে দিচ্ছেন বাড়িগুলোতে।
এ নিয়ে রবিবার রাতে তার সাথে কথা হলে খাতামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জুয়েল চৌধুরী বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে আমার ইউনিয়নের বকশীপাড়ার মানুষ চরম উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় রয়েছেন। লকডাউন করা ২০টি বাড়িতে থাকা মানুষ জনের কেউ কোন খোঁজখবরও নিচ্ছেন না। এমন কি ওইসব বাড়ির আশেপাশেও যেতে রাজি হচ্ছে না অনেকেই। তাই ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি জনগনের দেখভালের দায়িত্বটা আমার এবং তাদের সুখ দুঃখে পাশে দাঁড়নো আমার দায়িত্ব কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। তাই আমি নিজের দায়িত্ব কর্তব্য মনে করে খাদ্য সামগ্রীর বস্তা কাঁধে নিয়ে তাদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছি। একই তাদের দৈনন্দিন চাহিদাগুলোও জানার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন জনগনের পাশে দাড়ানো আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরীর এমন মানবিক কর্মকান্ডে গোটা উপজেলায় ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। উল্লেখ্য, মো. জুয়েল চৌধুরী সৈয়দপুর উপজেলার ৫ নম্বর খাতামধুপুর ইউনিয়নে দুই মেয়াদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ওই ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মরহুম আজিজুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে।
0 মন্তব্যসমূহ