মুহাম্মদ মহিউদ্দিনঃ
চট্টগ্রাম মহানগরীর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও বিস্তার প্রতিরোধ এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বিশেষ সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আজ রবিবার (২৯ মার্চ) দামপাড়া পুলিশ লাইন্সস্থ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মাহাবুবর রহমান, বিপিএম, পিপিএম।
উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিন।
সভায় সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং, হোম কোয়ারেন্টিন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন, আইসোলেশন, লকডাউন সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়ন, আক্রান্ত ব্যক্তির ইভাকুয়েশন, করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা, করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলে গৃহীত কার্যক্রম, চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী, পুলিশ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের করোনা ভাইরাস সুরক্ষার জন্য করণীয়, টেলিমেডিসিন, এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, থানা পুলিশ ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর কর্তৃক এলাকাভিত্তিক করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিদের সন্ধান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থা, ডেঙ্গু প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা, বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক ডিসইনফেকশন কার্যক্রম, জরুরী সেবা-৯৯৯, ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
সমন্বয় সভায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত/ সন্দেহভাজন সংবাদ এলে করণীয়, পরীক্ষায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত হলে করণীয়, বাসা বিল্ডিং/এলাকা লকডাউন প্রক্রিয়া, আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুতে করণীয়, সন্দেহভাজন মৃত্যুর ক্ষেত্রে করণীয় ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাসহ একটি SOP তৈরির প্রস্তাব করা হয়।
সভায় করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় গ্রহীত সিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে রয়েছেঃ
১। সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকি,
২। কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সেই রোগীকে এ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেয়া,
৩। সিএমপি’র হটলাইনে (০১৪০০৪০০৪০০)ফোন করলে মহানগরে কর্মরত ডাক্তারগনকে যাতায়াতের সুবিধা প্রদান
৪। সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা ও সিটি করপোরেশন কর্তৃক সমন্বিতভাবে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জীবাণুনাশক ঔষধ ছিটানো
৫। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার দাফন/সৎকারের জন্য নগরীর একটি কবরস্থান/সৎকারের স্থান কে নির্দিষ্ট করা ও এ সংক্রান্ত টিম গঠন করা
৬। আইসিইউ(ICU) সুবিধা সম্বলিত একটি হাসপাতালকে ডেডিকেটেড করা
৭। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ও ঔষধের মজুদ ও মূল্যবৃদ্ধি সংক্রান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করা
৮। সিভিল সার্জন কর্তৃক টেলিমেডিসিন সুবিধার জন্য দক্ষ ডাক্তারদের নিয়ে একটি টিম গঠন করা
৯। আইসিইউ তে দায়িত্ব পালন করার জন্য ডাক্তার ও নার্স এর সমন্বয়ে টিম গঠন এবং কর্মরত ডাক্তারদের থাকা-খাওয়ার ব্যাপারে আইসোলেটেড হোমের সুব্যবস্থা করা
১০। জনগণের সুবিধার জন্য দোকানে আড্ডা না দিয়ে খাবার কিনে বাসায় নিয়ে যাবার উদ্দেশ্যে খাবার দোকান ও রেস্টুরেন্ট খোলা রাখা।
স্থানীয় কাউন্সিলরসহ জনপ্রতিনিধিগনদের সম্পৃক্ত করে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে করোনা ভাইরাস এর বিরুদ্ধে সফলতা আসবে বলে উপস্থিত সবাই আশা ব্যক্ত করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) আমেনা বেগম, বিপিএম-সেবা; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) এস. এম. মোস্তাক আহমেদ খান বিপিএম, পিপিএম (বার); অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) শ্যামল কুমার নাথ;জনাব অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, সদস্য সচিব, কমিউনিটি পুলিশিং কমিটি, চট্টগ্রাম মহানগর, চট্টগ্রাম; ডাক্তার হাসান শাহরিয়ার কবীর,পরিচালক (স্বাস্থ্য), চট্টগ্রাম বিভাগ ও সদস্য সচিব – ফোকাল পয়েন্ট, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় গঠিত বিভাগীয় কমিটি,চট্টগ্রাম ; আসিফ ইকবাল, সহকারী পরিচালক, এনএসআই, চট্টগ্রাম; মেজর শামীম, টু আইসি, র্যাব-৭; ডাঃ এসকে ফজলে রাব্বী, সিভিল সার্জন, চট্টগ্রাম জেলা; বদিউল আলম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, চট্টগ্রাম জেলা; মোঃ আকলাকুল আরেফিন, উপ-পরিচালক, ডিজিএফআই, চট্টগ্রাম; বিকাশ চন্দ্র দাস, জেলা কমান্ড্যান্ট, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, চট্টগ্রাম; প্রফেসর ডাঃ মজিবুল হক, সভাপতি, বিএমএ,চট্টগ্রাম; মোঃ শামসুদ্দোহা, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন; মেজর সাঈদ, GSO-2, চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট; ডাঃ আফতাবুল ইসলাম, ডিডি, চমেক হাসপাতাল; ডাঃ আহমেদ রসুল, তত্ত্বাবধায়ক, বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম সহ পুলিশের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও সরকারী -বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
0 মন্তব্যসমূহ