নিউজ ডেস্কঃ
করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত ইতালির রোম শহরের ছিটমহল সেন্ট পিটার্সবার্গ স্কয়ারে এক সমাবেশে অংশ নিয়ে ভক্তদের গালে চুমু ও মাথা বুলিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। তার এই শারীরিক অসুস্থতার কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ পোপের এ অসুস্থতার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত বিস্তারিত কোনও তথ্য জানায়নি।
বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে বলছে, অসুস্থতার কারণে রোমের পাদ্রীদের সঙ্গে এক গণজমায়েতে অংশ নিতে পারেননি পোপ ফ্রান্সিস।
ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ বলছে, ৮৩ বছর বয়সী এ ধর্মগুরু হালকা অসুস্থতায় ভুগছেন। গণজমায়েতে অংশ না নিলেও পূর্বনির্ধারিত অন্যান্য কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন তিনি। তবে ভ্যাটিকানের শান্তা মার্তা হোটেলের কাছে অবস্থান করবেন তিনি। এ হোটেলেই বসবাস করেন পোপ ফ্রান্সিস।
পোপের অসুস্থতার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানায়নি ভ্যাটিকান। তবে বুধবার সেন্ট পিটার্সবার্গ স্কয়ারের সমাবেশে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের এই ধর্মগুরুকে কাঁশি দিতে ও নাক পরিষ্কার করতে দেখা যায়। এছাড়া সমাবেশে অংশ নেয়া ভক্তদের সঙ্গে করমর্দন এবং তাদের মাথায় চুম্বন করতেও দেখা যায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের এই ধর্মগুরুকে।
পোপের অসুস্থ হওয়ার খবর এমন এক সময় এল যখন কোভিড-১৯ নামের করোনাভাইরাসের প্রকোপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ইতালি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪০০ জনের বেশি মানুষকে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। যাদের অধিকাংশই দেশটির উত্তরাঞ্চলের। রোমেও তিনজনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে তারা সবাই চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন।
বৃহস্পতিবার আরও পরের দিকে স্টার্ট অব লেন্টে এলাকায় রোমের পাদ্রীদের সঙ্গে এক গণ-উদযাপনে অংশ নেয়ার কথা ছিল পোপ ফ্রান্সিসের।
আর্জেন্টাইন এই পোপকে সাধারণত অসুস্থ হতে খুব কমই দেখা যায়। তরুণ বয়সে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যার কারণে ফুসফুসের কিছু অংশ হারিয়ে ফেলেন তিনি। ফুসফুসের এ সমস্যার জন্য বাতের ব্যথা নিয়ে চলাফেরা করেন তিনি; স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারেন না।
করোনায় এ পর্যন্ত চীনসহ সারা বিশ্বে ২৮০৪ জন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ১৬৬ জন। এ ভাইরাসে মৃতের তালিকায় এবার উঠে এসেছে ইতালির নাম। ইউরোপের মধ্যে ইতালিতেই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে মারাত্মক। দেশটিতে অন্তত ৪০০ জন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১২ জন।
অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়া ও সুইজারল্যান্ডেও ছড়াচ্ছে এ ভাইরাস। ইতালির পরিস্থিতি দেখে প্রতিবেশী সব দেশ ইতোমধ্যে সীমান্ত বন্ধ করেছে। ফ্রান্স ও জার্মানিতেও করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
0 মন্তব্যসমূহ