নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চকরিয়া উপজেলার প্রবেশমূখ হারবাং ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার জনসংখ্যার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা নিশ্চিত করতে ২৬ শতক জমির ওপর সরকারীভাবে গড়ে উঠেছে 'হারবাং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র'। এটি থেকে দৈনিক প্রায় ২০০-২৫০ লোক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা গ্রহণ করে থাকে। এখানে একজন মেডিকেল অফিসার, একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, একজন ফার্মাসিস্ট, একজন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, একজন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা, একজন এমএলএসএস ও একজন আয়া প্রতিনিয়ত সেবা নিশ্চিত করতে পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
হারবাং ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, খতিয়ানভুক্ত ২৬ শতক জায়গার প্রায় অনেকাংশ স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেছে।
এই বিষয়ে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার সুজন ত্রিপুরার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন "আমি এইখানে নতুন যোগদান করেছি। বিস্তারিত জানি না, তবে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিছু জায়গা স্থানীয়রা দখল করেছে বলে শুনছি"।
কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট আহমদ শফির বলেন,"আমি এইখানে প্রায় ২০ বছর যাবত চাকরি করছি। খতিয়ান মূলে ২৬ শতক জায়গা থাকলেও তার প্রায় একটু একটু করে দখল করে নিয়েছে পার্শ্ববর্তী জায়গার মালিকগণ। এছড়াও হাসপাতালের নিচে সন্ধ্যা হতে না হতেই শুরু হয় উশৃংখল ছেলেদের মাদক সেবন ও বাজে আড্ডা'র মত অনৈতিক কর্মকান্ড। মাঝেমধ্যে চুরির ঘটনাও ঘটে। বর্ষাকালে গরু-ছাগল এনে জড়ো করে নোংরা করে হাসপাতালের পরিবেশ। এজন্য একটি বাউন্ডারি ওয়ালের আবেদন করলে মন্ত্রণালয় থেকে পাশ হয়ে কয়েক বার নির্মাণ কাজ করতে এসে জায়গার সমস্যার কারণে বরাদ্দ গুলি ফেরত চলে যায়। এই বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শাহবাজ কে অবগত করেও কোন সুফল পাওয়া যায় নি বলে তিনি জানান।
এই ব্যাপারে হারবাং ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক নাছির উদ্দীন বলেন "আমি চাকরিতে যোগদান করেছি প্রায় সাড়ে তিন বছর। এই সময়ের মধ্যে স্থানীয় ভাবে বেশ কয়েকবার পরিমাপ করে উক্ত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেও কোন ফলাফল পায়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা চাইলেও তারা কোন সহযোগিতা করেনি। সম্প্রতি একটি বাউন্ডারী ওয়ালের বরাদ্দ নিয়ে কাজ শুরু করতে আসা লোকদের সহযোগীতা করে কাজটা করার প্রস্তাব দিয়েও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কোন ধরনের সহযোগীতা পান নি বলে তিনি জানান।
এই বিষয়ে বাউন্ডারি ওয়ালের কাজ করতে আসা কন্ট্রাক্টর সোলতান আহমেদের সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন "আমরা হারবাং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে একটি বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ এর কাজ পেয়েছি। এটি বাস্তবায়ন করতে আমরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছ থেকে অনুমোদনও নিয়েছি। ইট বালি ও অন্যান্য সরঞ্জাম মজুদ শেষে স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা কাজ শুরু করার ব্যাবস্থা করে দিলেও স্থানীয় এমইউপি ইলিয়াছ আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে কাজ বন্ধ করে দেয়। তাই আমরা চলে আসি। যদি জায়গার সমস্যা সমাধান হয় তাহলে কাজ করতে আমাদের আপত্তি নেই বলে জানান।
প্রভাবশালীদের দখলে থাকা জায়গা ফেরত পেতে এবং বাউন্ডারি ওয়ালের কাজ বাস্তবায়ন করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা কর্মচারীসহ স্থানীয় জনসাধারণ।
0 মন্তব্যসমূহ