২ মাসের সন্তানের নাকে-মুখে টেপ পেঁচিয়ে হত্যা করেও মা স্বাভাবিক
ডেস্ক নিউজঃ
পরিবারের সদস্যদের চোখ এড়িয়ে ঘরেই ২ মাসের সন্তানকে খুন করল মা। গোটা দিন সন্তান চুরি যাওয়ার নাটক! সন্ধ্যা জৈন মালোর ভূমিকায় হতবাক দুঁদে পুলিশ কর্মকর্তারাও। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের রাজধানী কলকাতার বেলেঘাটায় ঘটেছে এই নির্মম ঘটনা।
মুহূর্তের রাগ নয়, ২ মাসের সন্তানকে খুনের জন্য ২ সপ্তাহ ধরে পরিকল্পনা করেছিল সন্ধ্যা। কারণ, বাড়িতে সকলের চোখ এড়িয়ে বিষয়টি মোটেও সহজ ছিল না। প্রয়োজন ছিল নিখুঁত পরিকল্পনার। তাই খুনের ছক কষা শেষ হওয়ার পরও সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করেছিল অভিযুক্ত।
রবিবার স্বামী-সহ পরিবারের অন্যান্যরা বেরোতেই সন্ধ্যা মনে করে যে এটাই মোক্ষম সুযোগ। কিন্তু সেখানেও সমস্যা ছিল। কারণ, পরিবারের কেউ না থাকলেও ঘরেই ছিলেন শিশু সানায়ার পরিচারিকা। তাই পরিচারিকার ছাদে যাওয়ার সুযোগকে কাজে লাগায় সে। পরিচারিকা ঘর ছাড়তেই সন্তানকে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করে সন্ধ্যা।
কিন্তু ব্যথা পেতেই কাঁদতে শুরু করে খুদে। কান্না শুনলেই ছুটে আসবেন পরিচারিকা, টের পেতে পারেন প্রতিবেশীরাও। সেই কারণে সন্তানের কান্না বন্ধ করতে নাকে মুখে সেলোটেপ আটকে দেয় মহিলা। ফলে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয় ছোট্ট সানায়ার। এরপর দেহ লোপাট করতে মৃত সন্তানকে কোলে নিয়ে ফেলে দেয় শুকনো একটি সেপটিক ট্যাঙ্কে। এরপর ঘরে ফিরে নিজেকে আঘাত করে সন্ধ্যা। খুলে দেয় ফ্ল্যাটের সদর দরজা। আর মাথা ঠাণ্ডা রেখে মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই মেয়েকে খুন করে দেহ লোপাট করে সন্ধ্যা।
এরপর পরিবারের সদস্যরা ফিরতেই শুরু অভিনয়। পুলিশ কর্মকর্তাদের কথায় সন্তান খুনের পরও তাঁর আচরণে এক ফোঁটাও অসংগতি ছিল না। এমনকী তিনি নিজেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কাল্পনিক যে যুবকের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ করে সে তাঁরও বেশ বাস্তব বর্ণনাও দেয়! কিন্তু হিসেব কষে সব দিক ঠিক রাখলেও শেষ পর্যন্ত ধরা দিতেই হল প্রভাবশালী সন্ধ্যা জৈন মালো।
কিন্তু কেন? সত্যিই কী মানসিক অবসাদ বা পোস্ট প্রেগন্যান্সি মানসিক পরিবর্তনের কারণে এই নৃশংসতা? মনোবিদদের কথায়, সন্তান জন্মের পরবর্তী মানসিক অবসাদ কিছু ক্ষেত্রে ভয়ংকর আকার নেয়। সেক্ষেত্রে মারাত্মক ভয়ংকর হয়ে ওঠেন মায়েরা। আদৌ তার জেরে এই ঘটনা কি না, তা স্পষ্ট হবে অভিযুক্তের মানসিক পরীক্ষার পর।
তবে আসল ঘটনা সামনে আসার পর সন্ধ্যার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা ভাবাচ্ছে তদন্তাকারীদের। যদিও মানসিক পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
/সংবাদ প্রতিদিন।
0 মন্তব্যসমূহ