এন এ আজাদঃ
ইয়াবা ও পতিতা ব্যবসার মহাজন রোহিঙ্গা নাগরিক জাহেদ তার পরিবার নিয়ে এখন চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলাস্থ কামাল বাজারে বসাবস করে আসছে বলে জানা গেছে। স্বাধিনতার পর থেকে সীমান্তবর্তী দেশ হওয়ায় মায়নমার থেকে রোহিঙ্গারা সীমানার কড়া নজরদারীর চক্ষুকে ফাঁকি দিয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করে এ দেশে। বাংলাদেশের আইনের তেমন প্রয়োগ না থাকায় এসব অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা সুযোগ বুঝে দেশের যে কোন জায়গায় অবস্থান নিয়ে বসবাস শুরু করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে হাজারো রোহিঙ্গা নাগরিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দেশের বিভিন্ন আনাচে কানাচে। তাছাড়া কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ উপজেলায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত লাখো রোহিঙ্গারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অগোচরে দেশের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বসবাস শুরু করে দিয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দীর্ঘ ২০/২৫ বছর আগে এদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা ইতিমধ্যেই দুর্নীতিবাজ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে তৈরী করেছে জন্ম নিবন্ধন সহ জাতীয় পরিচয় পত্র। এটিকে পুঁজি করে এই রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীরা বনে গেছে দেশীয় নাগরিক। ধীরে ধীরে তারা শক্তি বৃদ্ধি করে জড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে। প্রতিনিয়নত তারা ঘটিয়ে চলেছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, খুন, রাহাজানী সহ মাদক ও মানব পাচারের মতো জঘন্যতম অপরাধ। এতে দেশের আইনশৃঙ্খলার যেমন অবনতি ঘটছে, তেমনি পরিবেশ ও স্থানীয়দের উপর চরম প্রভাব পড়ছে। হিমশিম খেতে হচ্ছে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহ প্রকৃত বাঙ্গালীদের। এসব রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের কারণে দেশের আয়তন ও চাহিদা অনুপাতে দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর দাম। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় অসহায় দারিদ্র জনগোষ্ঠিকে।
গোপন সূত্রে জানা গেছে, ইয়াবা ও মানব পাচারকারী জাহেদ নামের এক রোহিঙ্গা নাগরিকের ভয়াবহ তথ্য। আজ থেকে দীর্ঘ ১০/১৫ বছর পূর্বে রোহিঙ্গা নাগরিক মোঃ তাহের ও লায়লা বেগমের পুত্র এই মোঃ জাহেদ মায়নমার থেকে স্বপরিবারে এ দেশে অনুপ্রবেশ করে পুরো পরিবার বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে সৌদিয়ায় পাড়ি জমান। মোঃ তাহের ও লায়লা বেগমের পুত্র জাহেদ পবিত্র মক্কা নগরীতেও বিভিন্ন অপরাধ করার কারণে তাকে সৌদি সরকার এদেশে ফেরত পাঠান। স্বভাব পালটানো বড় দায়, এই অনৈতিক চরিত্রের জাহেদ রোহিঙ্গা নাগরিক হওয়ার সুবাদে মায়ানমারে যোগাযোগ স্থাপন করে, সেখান থেকে নারী ও ইয়াবা এনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সুকৌশলে পাচার করে বনে গেছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার মালিক। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, এই জাহেদ বর্তমানে পটিয়া উপজেলাধীন কামাল কোম্পানির বাড়ীর সামনে কামাল বাজার নামক স্থানে নিজস্ব কাপড়ের দোকানের আড়ালে তার স্ত্রী সহ পতিতা ও ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়। এছাড়াও এই জাহেদ দীর্ঘদিন বাংলাদেশে অবস্থান করার সুবাদে স্ত্রী সানজিদা বেগম সহ তার ভাই মোঃ ইয়াছিন জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরী করে নেন। ঐ জাহেদ তার পরিবার নিয়ে পটিয়ায় বসবাস করলেও তার ও তার স্ত্রীর পিতা-মাতা আত্মীয়স্বজনেরা বর্তমানে সৌদি আরবে বসবাস করে। তাছাড়াও ঐ জাহেদের কিছু নিকট আত্মীয়স্বজন এখনো মায়ানমারে বসবাস করে আসছে। বর্তমান সরকারের যুগান্তরকারী পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে এই ইয়াবা ও মানব পাচারকারী জাহেদের লাগাম টেনে ধরার সময় এখনই।
এই বিষয়ে পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ বোরহান উদ্দিন বলেন, কোন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী বসবাস করছে এমন সু-নির্দিষ্ট তথ্য কিংবা অভিযোগ পেলে সাথে সাথেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।
0 মন্তব্যসমূহ