জনসেবার শপথ নিয়ে জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে ইয়াবার কলঙ্ক মাথায় নিয়ে চেয়ারম্যানসহ ৫ ইউপি সদস্য'র চেয়ার দীর্ঘদিন ধরে খালি। কক্সবাজারের টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাজাহান মিয়া এবং ইউপি সদস্য ওমর হাকিম, আব্দুল্লাহ, আজিম উল্লাহ, আব্দুল হামিদ ও এনামুল হক এনাম এসব জনপ্রতিনিধিরা ইয়াবা মামলায় অভিযুক্ত, বন্ধুক যুদ্ধে নিহত, পলাতক ও কারাগারে রয়েছে। এতে সেবাপ্রার্থীরা তাদের নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী। ভেংগে পড়েছে গ্রাম আদালতের বিচার ব্যবস্থা। সেবা ও বিচার প্রার্থীরা অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরে থানামুখি হচ্ছে। আবার সেখানেও ভুক্তভোগীরা হয়রানী শিকার বলে অভিযোগ রয়েছে।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড থেকে ৩য় বারের মত নির্বাচিত মেম্বার বিএনপি নেতা ওমর হাকিম ইয়াবা মামলা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রয়েছে। একই পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইয়াবা ডন খ্যাত আব্দুল্লাহ ইয়াবা অভিযুক্ত হয়ে প্রায় দেড় বছর ধরে পলাতক রয়েছে। খবর রয়েছে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের আরব আমিরাতে অবস্থান করছে। ওই পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার বহু বিতর্কিত আজিম উল্লাহ সম্প্রতি ইয়াবা অস্ত্র মামলায় কারাগারে গেছে। ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল হামিদ প্রঃ ডাকাত হামিদ কথিত বন্ধুক যুদ্ধে কিছুদিন আগে মারা পড়েছে। এনামুল হক এনাম ইয়াবা মামলায় কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় ৮নং ওয়ার্ড থেকে মেম্বার নির্বাচিত হয়ে তিনি সেই থেকে এ পর্যন্ত কারাগারে রয়েছে। এখনো পর্যন্ত ওই ওয়ার্ডের জনগন তাদের জনপ্রতিনিধির মুখ দেখেনি।
এই বিষয়ে টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু সৈয়দের কাছে জানতে চাওয়া হলে, তিনিও ইয়াবা অভিযুক্তদের বিচার দাবী করেন। তবে এখানেই বিপত্তি, তার সন্তান অব্দুল্লাহ ইয়াবা অভিযুক্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্কুল শিক্ষক জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু সৈয়দ পরিষদে উপস্থিত থাকে না এবং প্রয়োজনে পাওয়া যায় না। ৪নং ওয়ার্ডের শাহ আলম মেম্বারকে পরিষদে নিয়মিত পাওয়া গেলেও অন্য মেম্বারদের দেখা মিলে না নিয়মিত। এই পরিষদ চলছে অনেকটা কান্ডারী বিহীন নৌকার মত। আর এদিকে চরম ভাবে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই ইউনিয়নের এক লক্ষাধিক মানুষ। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রানসহ উপ নির্বাচনের দাবী জানান এলাকার সচেতন মহল।
পরিকল্পির কক্সবাজার আন্দোলনের সমন্বয়ক (আইন) ব্যারিষ্টার ফারজানা রশিদ জানান, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ৩৪ ধারার ৪ এর (ক)/(খ) উপ-ধারা অনুযায়ী কোন জনপ্রতিনিধি যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে পরিষদের পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকিলে এবং পরিষদ বা রাষ্ট্রের স্বার্থের হানিকর কোন কার্যকলাপে জড়িত থাকিলে অথবা দুর্নীতি বা অসদাচরণ বা নৈতিক স্খলনজনিত কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া দণ্ডপ্রাপ্ত হইয়া থাকিলে উক্ত জনপ্রতিনিধি তাহার স্বীয় পদ হইতে অপসারণযোগ্য হইবেন।
0 মন্তব্যসমূহ