যেকোনো নারীকে একা পেলেই ধর্ষণের ‘টার্গেট’ নিয়েছিলেন ওরা চারজন। সেই মোতাবেক সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাত্রী পরিবহনের ‘ফাঁদ’ও পাতা হয়। পরে এক নারী শ্রমিককে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। পিরিয়ডের কথা বলেও রেহাই পাননি তিনি, ধর্ষণের পর রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে ফেলে রাখা হয় রাস্তার পাশে।
এই ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেছেন। আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের আনোয়ারার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জয়ন্তী রানী রায়ের আদালতে তাঁরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আনোয়ারায় এক নারী শ্রমিককে ধর্ষণের ঘটনায় ওই দুজনকে গতকাল শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ ছনহরা গ্রামের হেলাল উদ্দিন (৩০) ও আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ গ্রামের মোহাম্মদ মামুন (১৮)। মামুন ওই সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক।
গ্রেপ্তার দুজনের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ জানান, যেকোনো নারীকে একা পেলে ধর্ষণের ‘টার্গেট’ নিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে চাতরী চৌমুহনী বাজারে অবস্থান নিয়েছিলেন চার ব্যক্তি। ওই সময় এক নারী চন্দনাইশের বরকল যাওয়ার কথা বললে অটোরিকশা চালক মামুন তাঁকে উঠতে বলেন। ওই অটোরিকশার পেছনে ছিলেন আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নের আবদুল নূর, বাঁশখালীর মোহাম্মদ শহীদ এবং সামনে চালক মামুনের পাশে বসেন হেলাল। চাতরী চৌমুহনী থেকে ছেড়ে যাওয়া গাড়িটি কালাবিবির দীঘি সংলগ্ন এলাকায় এলে আবদুল নূর ও শহীদ ওই নারীর মুখ চেপে ধরেন। ওই সময় অটোরিকশাটি চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের রাস্তা দিয়ে ভেতরে চলে যায়। সেখানে রাস্তার পাশে প্রথমে আবদুল নূর ও পরে শহীদ ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। ওই নারী পিরিয়ড সংক্রান্ত অসুস্থতার কথা বলে ছেড়ে দিতে বললেও তারা শোনেনি। দুজনের ধর্ষণের পর ওই নারী রক্তাক্ত হয়ে পড়লে সেখান থেকে পালিয়ে যান চালক মামুন ও হেলাল।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত বুধবার রাতে কারখানার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ওই নারী (১৯) ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। তাঁকে রাতে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই নারী স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন। তাঁর বাড়ি চন্দনাইশ উপজেলায়। এ ঘটনায় ওই নারীর বড় ভাই বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৪ জনকে আসামি করে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনোয়ারা থানায় মামলা করেন।
ওসি দুলাল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণের মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুজনই শনিবার বিকেলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাঁদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত অন্য দুজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
/প্রথম আলো!
0 মন্তব্যসমূহ