আব্দুল আলীম নোবেলঃ
জমির রেকর্ডীয় মালিকপক্ষ বিক্রয়ের বিষয়টি সম্পূর্ণ গোপন রেখে নিজেদের ওয়ারিশ জাহির করে অধিগ্রহণকৃত জমির সরকারী টাকা তুলে নিয়েছে এবং আরো কয়েকটি চেক উত্তোলনের জন্য ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জমির ক্রয়কারী ভুক্তভোগী পক্ষ ভুঁয়া ওয়ারিশের নামে সৃজিত খতিয়ান বাতিল সহ তাদের অনুকূলে চেকের কার্যক্রম স্থগিত রাখতে ভূমি হুকুম দখল কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্টদের তড়িৎ ব্যবস্থা চেয়েছেন। তবে এ জটিলতায় জমির অধিগ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ঐ প্রকল্পের পরিচালক মোঃ আরিফুর রহমান ভূঞা ও উপ পরিচালক (হিসাব) এস এম এরশাদ হোসেন সহ আরো কয়েকজন বাহিরের সিন্ডিকেটকেই দুষছে ভুক্তভোগীরা। বড় কর্তা সহ অফিসে ঘাপটি মেরে থাকা ফরহাদ হোসেন নামের একজন সিন্ডিকেটের অন্যতম বলে জানা যায়। তিনি ও সিন্ডিকেটের অন্যরা কমিশন ভিত্তিক এ কাজটি করে অধিগ্রহণ শাখার এমন গুরুত্বপূর্ণ অনুদানের টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। এ কমিশন কখনো ৩% আবার কখনো তা এক লাফে ৬% এ গিয়ে দাঁড়ায়। চেকের মালিকরাও দ্রুত সময়ে তাদের অধিগ্রহণকৃত জমির টাকা পেতে সিন্ডিকেট চক্রের নানা বাহানায় নিজেকে সমর্পন করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাদের অন্যায় খায়েস পূরণে কমতি হলেই বিপত্তি ঘটে অনুদানের চেকের। বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় অনুদান চেকের কার্যক্রম স্থগিত করে মাসের পর মাস সংশ্লিষ্ট শাখায় আটকে রাখা হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের এসব কর্মকর্তারা সপ্তাহের দুই দিনই মাত্র ঢাকা থেকে কর্মস্থলে আসেন। কম সময়ে আসতে গিয়ে তারা বিমান যোগেই আগমন ঘটায়। আর এদিকে প্রত্যাশী চেকের শত শত মানুষ অধিগ্রহণ অফিসে ভিড় করেও চেক না পেয়ে ব্যর্থ মনোরথে ফিরে যান। এ চিত্র প্রতিদিনের।
সূত্র জানায়, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে নির্মিতব্য কয়লা বিদ্যুত প্রকল্পের জন্য হোয়ানক মৌজার বিএস খতিয়ান নং- ২২৮ এর ৬টি দাগের ০.৭১ একর জমি সরকার পক্ষে অধিগ্রহণ করা হয়। এসব জমির রেকর্ডীয় মালিক ছিলেন একই মৌজার কবির আহম্মদ এর ওয়ারিশ খায়রুল বশর গং। তারা বিভিন্ন সময়ে দলিল নম্বর ১৪৪৭, ৬৫২ ও ১৬৩১ মূলে একই এলাকার আব্দুল মান্নান, পিতা- মৃত গোলাম সুলতান গংদের বিক্রি করে সম্পূর্ণ নিঃস্বত্তবান হয়ে যান। এদিকে এসব জমি কেনার পর ৯১৬ নং নাম জারী ও জমাভাগ মামলা সৃজন করেন জমির ক্রেতা আব্দুল মান্নান গং। সম্প্রতি অধিগ্রহণ কর্তৃপক্ষ ০৪/২০১৩-১৪ইং মূলে ঐ জমি অধিগ্রহণ করলে খায়রুল বশর গং নিজেদের সত্ত্ব তামাদি হওয়ার বিষয়টি গোপন রেখে রোয়েদাদ নং ৪৯ মূলে জমির মালিকদের নামে সৃজন করা এল,এ চেক নং- ১১৯৪৩০ মূলে চেকটির মাধ্যমে সমুদয় টাকা নিজেরা তুলে নিয়েছে এবং বাকী আরো কয়েকটি চেক উত্তোলনের জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাচ্ছে। এ অবস্থায় জমির প্রকৃত মালিক নয় এমন ওয়ারিশদারদের বিপরীতে চেকের টাকা উত্তোলনের অবৈধ সুযোগ দেওয়া হলে এলাকায় সামাজিক অবস্থার বিঘ্ন ঘটার শঙ্কাও রয়েছে।
এ নিয়ে প্রকল্প পরিচালক মোঃ আরিফুর রহমান ভূঞা জানান, সকল ফাইলপত্র যাচাই করতে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন বলে চেক দিতে দেরী হয়। তবে প্রকৃত জমি মালিকদের দাবী, এল,এ এর ক্ষতিপূরণের চেক প্রদানে তেমন সমস্যা না হলেও অনুদানের চেকেই কেবল জট সৃষ্টি করছে দুষ্টু চক্র। কমিশন বাণিজ্যকে হৃষ্টপুষ্ট করতেই কেবল তাদের এত নাটকীয়তা। এল,এ চেকের বিষয়ে তেমন উচ্চ বাক্য না থাকলেও বিদ্যুত বিভাগের অনুদানের চেক নিয়ে সমস্যার অন্তঃনেই- এমন দাবী সচেতন মহলেরও।
0 মন্তব্যসমূহ