আব্দুল আলীম নোবেলঃ
বাংলাদেশ বিশ্বে সর্বপ্রথম সফল উপকূলীয়
বনায়নকারী দেশ। উপকূলীয় জনগণের আরও অধিক সুরক্ষা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ বন
বিভাগ উপকূলীয় অঞ্চলে জেগে ওঠা নতুন চরে ১৯৬৬ সাল থেকে ম্যানগ্রোভ বনায়ণ
শুরু করে। আর কক্সবাজারের শহরের অতী সন্নিকটে প্রকৃতির অপরূপ উপূলীয়
বনায়নের পাশে বিশাল চর ও কয়েক হাজার একর জুড়ে উপকূলীয় বনায়ণের ঘেরা যেন
প্রকৃতির হাতে গড়া একটি অনন্য সুন্দর দৃশ্য। দেখলে মনে হবে এটি যেন আরেকটি
সুন্দরবন। স্থানীয়া এটিকে মিনি সুন্দরবনও বলে থাকে। এই সম্পদকে সুষ্টু
ব্যবহার করে কোষ্টাল পার্কে রূপ দেয়া যেতে পারে এমনটি দাবী করছেন সচেতন
এলাকাবাসী ও পরিকল্পিত কক্সবাজার আন্দোলনের সংশ্লিষ্টরা। সর্বোপরি, সবুজ
বেষ্টনী হিসাবে, উপকূলীয় বন প্রাত্যক্ষভাবে ঘুর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাস সহ
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে লক্ষ লক্ষ জীবন এবং সম্পদের বিপুল ক্ষয়ক্ষতির
হাত থেকেও বাঁচায়।
কক্সবাজার আন্তর্জতিক বিমান বন্দরের উত্তর-পূর্ব ও নুনিয়ারছড়ার টুট্টাপাড়ার
উত্তর পাশে এর অবস্থান। এই উপকূলীয় এই বন ও চরের পূর্বে পাশে রয়েছে
বাকঁখালী নদী এবং উত্তর পাশে রয়েছে বঙ্গপোসাগর। ওই এলাকায় গেলে দেখা যায়,
বিমান উঠা নামার মনোরম দৃশ্য, দুর থেকে দেখা মিলে মহেশালী দ্বীপ ও সোনা
দিয়া, পশ্চিম পাশে রয়েছে নাজিরার টেক শুটকি পল্লী। এছাড়া কাছ দেখা মিলে নদী
ও সাগরের মিতালীর বুক দিয়ে চলে যাওয়া নানা ধরের জলযানের চলা ফেরার সুন্দর
দৃশ্য। জেগে ওঠা চরে রয়েছে ঝাকে ঝাকে লাল কাঁকড়া। কয়েক হাজার একর প্যারাবনে
রয়েছে, বক, গাংচিল, ডাহুক, মাছ রাঙ্গা,পানকৌড়ি,শালিক, দোয়েল, বুলবুলিসহ
শতাধিক প্রজাতির পাখি।
কক্সবাজার পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক দীপক শর্মা দীপু জানান,
বন বিভাগ কর্তৃক উপকূলীয় বনায়ণের সফলতা প্রত্যক্ষ করে সরকার উপকূলীয় ১২
লক্ষ ৩৬ হাজার একর (প্রায় ৫ লক্ষ হেক্টর) এলাকা বনায়নের লক্ষ্যে পরিবেশ ও
বন মন্ত্রণালয় এর নিকট হস্তান্তর ও বন আইনের ৪ ধারায় সংরক্ষিত ঘোষণা
করেছেন।
বন বিভাগ ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ২ লক্ষ হেক্টর (প্রায় ৫ লক্ষ একর)
চরাঞ্চলে বনায়নের মাধ্যমে নয়নাভিরাম উপকূলীয় বন প্রতিষ্ঠা করেছে এবং এটি
বিশ্বের সর্ববৃহৎ উপকূলীয় বনায়ন কার্যক্রম। তবে পর্যটন জেলা হিসাবে বিশাল
এই জেগে ওঠা ও চর প্যারাবনকে পর্যটন শিল্পে কাজে লাগিয়ে বিনোদনের পাশাপাশি
অর্থনেতিকভাবে লাভবান হওয়া যাবে।
0 মন্তব্যসমূহ